রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মুরাদনগর গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। নিজের ক্ষেতের ফুলকপি কুপিয়ে নষ্ট করে সেই ভিডিও শেয়ার করেছেন ফেসবুকে। যেখানে নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যোগাযোগ করা হলে বলেন, ১০ হাজার ফুলকপি আবাদ করেছেন তিনি। প্রতিটির পেছনে খরচ পড়েছে ১৫ টাকা করে। কিন্তু পাইকারিভাবে কেজি ৫ টাকার বেশি কেউ নিচ্ছে না। তাই ক্ষোভে এমনটি করছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, মুরাদনগর সদর আলী স্কুল সংলগ্ন মাঠে তিনি বেগুন, মরিচ, পরাশ শিম, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা সবজি আবাদ করেছেন। এরমধ্যে ফুলকপিগুলো ভালো লাভের আশায় আবাদ করে উল্টো বেকায়দায় পড়তে হয়েছে।
একইবিলের কৃষক রওশন আলী খান জানান, তিনিও ১০ গন্ডা জমিতে ফুলকপি আবাদ করেছেন। প্রথমদিকে কিছু বিক্রি হলেও পরবর্তীতে ক্রেতাও মিলছে না। বাজারের বেপারিরাও নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাই ফুলকপি না তুলে মাঠেই রেখে দিয়েছেন। এখন সব নষ্ট হয়ে গেছে।
জানা যায়, মাঠে ফুলকপির দাম কৃষক পর্যায়ে যখন ৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, তখন বাজারে ২৫–৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের বেপারিদেরই কম দামে কিনে এই বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
উপজেলার শান্তিরহাট বাজারের বেপারি হোসেন আলী জানান, বাজারে প্রচুর ফুলকপি উঠায় ঠিকমতো বিক্রি হয় না। বাজারের নির্ধারিত দিনে আমাদের পাশাপাশি মৌসুমী ব্যবসায়ী ও কৃষকরাও সরাসরি হাটে ফুলকপি বিক্রি করেন। তাই কৃষকদের থেকে যা আনি তার অর্ধেকই নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পদুয়া ইউনিয়নের কৃষক হাকিম উদ্দিন জানান, সঞ্চয় এবং এনজিও থেকে ঋণের টাকায় ফুলকপিসহ নানা সবজি উৎপাদন করে এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। সামনের মৌসুমে নতুন সবজি চাষ করবে কি না, তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।
এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, নভেম্বর–ডিসেম্বরের দিকে ফুলকপির বেশ চাহিদা থাকে। দামও ভালো পাওয়া যায়। তখন ফুলকপির স্বাধও ভালো থাকে। কিন্তু এরপর থেকে স্বাধও কমে যায়, ক্রেতারাও প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিনতে চায় না। তাই দাম পাচ্ছেন না। তবে এবার রাঙ্গুনিয়ায় সব ধরনের সবজির বেশ ভালোই আবাদ হয়েছে। দুয়েকটা বাদ দিলে প্রায় সব সবজিতেই ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।