ঢাকা , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন কারাগার থেকেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন ইমরান খান বন্দর প্রতিরক্ষা জোরদারে সমুদ্রে পাকিস্তান নৌবাহিনীর মহড়া গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের জন্য স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ শুরু করেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বিদ্যুৎ খাতে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথে আফগানিস্তান, নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন বিএসএফ যেন আর পুশইন না করে, কড়া বার্তা বিজিবির ২০২৫-২৬ বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে সোমবার থেকে ১১ ব্যাংকে মিলবে নতুন সিরিজের ১ হাজার, ৫০ ও ২০ টাকার নোট চীন বাংলাদেশকে কৃষি ও গবেষণা ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে : সফররত চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী

নারীদের সুরক্ষায় ঢাকার গণপরিবহনে ‌‘হেল্প’ অ্যাপ চালু

ঢাকার গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালু হয়েছে ‘কিউআর কোড হেল্প’ অ্যাপ। এ অ্যাপের মাধ্যমে যৌন হয়রানিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চাইতে পারবেন নারীরা।

যৌথভাবে এ অ্যাপ তৈরি করেছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। অ্যাপটির পুরো নাম হ্যারাসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম (হেল্প)। প্রাথমিকভাবে এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকার বসিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে বাস্তবায়ন করা হবে।

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ডেইলি স্টার ভবনে অ্যাপটির উদ্বোধন করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এসময় বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল নাইনটিনের সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, মাগুরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নারীরা যে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এসব ঘটনা যতটুকু মিডিয়ায় আসে, বাস্তবে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সামাজিক ও পারিবারিক কারণে বিষয়গুলো সামনে আনতে চান না। গৃহকর্মীদের ওপরও নানা ধরনের নির্যাতন চলে, কিন্তু ৯৫ শতাংশ ঘটনাই সামনে আসে না।

অ্যাপের বিষয় ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ অ্যাপ যদি থানায় রিপোর্ট পাঠাতে পারে, তবে তা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (এফআইআর) হিসেবে গণ্য হতে পারে। পুলিশ চাইলে বাদী হয়ে মামলা করতে পারবে এবং তদন্ত শুরু করতে পারবে। এ অ্যাপকে কার্যকর করতে প্রয়োজনে ডিএমপি সহযোগিতা করবে।

ঢাকার পুলিশপ্রধান বলেন, ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো প্রচারের ক্ষেত্রে মিডিয়াকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে। যেসব খবর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে, সেগুলো বারবার প্রচার না করাই ভালো।

বিশেষ অতিথি মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, লিঙ্গবৈষম্য ও নারীর প্রতি হয়রানির ঘটনাগুলো তুলে ধরা এবং সচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরি। অধিকার কর্মীদের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও এ কাজটি করছেন, যা প্রশংসনীয়।

তিনি বলেন, ধর্ষণ, সহিংসতা বন্ধ করতে হলে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এ অ্যাপের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। মহিলা পরিষদও এর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করবে।

যেভাবে কাজ করবে ‌‘হেল্প’ অ্যাপ

‘হেল্প’ প্রকল্পের আওতায় মোহাম্মদপুর থেকে সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী বাসে কিউআর কোড বসানো হবে, যাতে নারীরা দ্রুত সহায়তা নিতে পারেন। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হবে, যারা ইমার্জেন্সি সেবার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। একে কার্যকর করতে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।

অ্যাপে রিপোর্ট করলে তা ভলান্টিয়ারদের কাছে তথ্য পৌঁছে যাবে। ভুক্তভোগী কাছের থানার ডিউটি অফিসারের কাছে সরাসরি কল করতে পারবেন।

এছাড়া জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে অ্যাপটি। অ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্টগুলো সংরক্ষণ করা হবে, যা পরে আইনি সহায়তার জন্য কাজে লাগবে। নিজের পরিচয় গোপন রেখেও এ অ্যাপে রিপোর্ট করার সুযোগ থাকবে।

অ্যাপটিতে ‘অ্যালার্ট’ অপশন থাকবে, যা চাপ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ভলান্টিয়ারদের কাছে ভুক্তভোগীর ‘রিয়েল টাইম লোকেশন’ পৌঁছে যাবে।

জনপ্রিয়

জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন

নারীদের সুরক্ষায় ঢাকার গণপরিবহনে ‌‘হেল্প’ অ্যাপ চালু

প্রকাশিত: ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

ঢাকার গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালু হয়েছে ‘কিউআর কোড হেল্প’ অ্যাপ। এ অ্যাপের মাধ্যমে যৌন হয়রানিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চাইতে পারবেন নারীরা।

যৌথভাবে এ অ্যাপ তৈরি করেছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। অ্যাপটির পুরো নাম হ্যারাসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম (হেল্প)। প্রাথমিকভাবে এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকার বসিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে বাস্তবায়ন করা হবে।

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ডেইলি স্টার ভবনে অ্যাপটির উদ্বোধন করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এসময় বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল নাইনটিনের সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, মাগুরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নারীরা যে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এসব ঘটনা যতটুকু মিডিয়ায় আসে, বাস্তবে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সামাজিক ও পারিবারিক কারণে বিষয়গুলো সামনে আনতে চান না। গৃহকর্মীদের ওপরও নানা ধরনের নির্যাতন চলে, কিন্তু ৯৫ শতাংশ ঘটনাই সামনে আসে না।

অ্যাপের বিষয় ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ অ্যাপ যদি থানায় রিপোর্ট পাঠাতে পারে, তবে তা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (এফআইআর) হিসেবে গণ্য হতে পারে। পুলিশ চাইলে বাদী হয়ে মামলা করতে পারবে এবং তদন্ত শুরু করতে পারবে। এ অ্যাপকে কার্যকর করতে প্রয়োজনে ডিএমপি সহযোগিতা করবে।

ঢাকার পুলিশপ্রধান বলেন, ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো প্রচারের ক্ষেত্রে মিডিয়াকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে। যেসব খবর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে, সেগুলো বারবার প্রচার না করাই ভালো।

বিশেষ অতিথি মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, লিঙ্গবৈষম্য ও নারীর প্রতি হয়রানির ঘটনাগুলো তুলে ধরা এবং সচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরি। অধিকার কর্মীদের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও এ কাজটি করছেন, যা প্রশংসনীয়।

তিনি বলেন, ধর্ষণ, সহিংসতা বন্ধ করতে হলে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এ অ্যাপের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। মহিলা পরিষদও এর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করবে।

যেভাবে কাজ করবে ‌‘হেল্প’ অ্যাপ

‘হেল্প’ প্রকল্পের আওতায় মোহাম্মদপুর থেকে সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী বাসে কিউআর কোড বসানো হবে, যাতে নারীরা দ্রুত সহায়তা নিতে পারেন। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হবে, যারা ইমার্জেন্সি সেবার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। একে কার্যকর করতে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।

অ্যাপে রিপোর্ট করলে তা ভলান্টিয়ারদের কাছে তথ্য পৌঁছে যাবে। ভুক্তভোগী কাছের থানার ডিউটি অফিসারের কাছে সরাসরি কল করতে পারবেন।

এছাড়া জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে অ্যাপটি। অ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্টগুলো সংরক্ষণ করা হবে, যা পরে আইনি সহায়তার জন্য কাজে লাগবে। নিজের পরিচয় গোপন রেখেও এ অ্যাপে রিপোর্ট করার সুযোগ থাকবে।

অ্যাপটিতে ‘অ্যালার্ট’ অপশন থাকবে, যা চাপ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ভলান্টিয়ারদের কাছে ভুক্তভোগীর ‘রিয়েল টাইম লোকেশন’ পৌঁছে যাবে।