জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সমতার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে থাকবে মানবিকতা, মূল্যায়ন, গ্রহণযোগ্যতা ও অধিকার। কোনো বৈষম্য থাকবে না। সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করবে। তাহলেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানের রক্তের সঠিক মূল্যায়ন হবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে ঝালকাঠি শহরের পূর্বচাঁদকাঠির একটি কমিউনিটি সেন্টারে দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের মানুষ ছিলেন জালিম সরকারের কারাগারে। খুন, গুম, নির্যাতনে মানুষ দুর্বিসহ জীবনযাপন অতিক্রম করেছে। মেধাকে মূল্যায়ন না করে দলের অন্ধ ভক্তদের সুযোগ সুবিধা ও চাকরি দেওয়া হতো। এ বৈষম্য ছাত্র ও যুবকরা মেনে নিতে পারেনি। কারণ সাধারণত ছাত্র, যুবক ও তরুণরা প্রতিবাদী হয়। এজন্যই বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে নেমে হাজারো ছাত্র-জনতা জীবন উৎসর্গ করেছে। লক্ষাধিক ছাত্র-জনতা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তবুও স্বৈরাচার সরকারকে পতন করতে পেরে তারা সন্তুষ্ট। আহতরা জানিয়েছে, প্রয়োজনে অপর পা, অপর হাত, অপর চোখ সব বিলিয়ে দিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে প্রস্তুত ছিলাম। তাদের এ রক্তদান ইতিহাস সাক্ষী হবে থাকবে। তাদের রক্তের বিনিময়েই স্বৈরাচারমুক্ত একটি স্বাধীন বাংলাদেশ পেলাম।
ড. শফিকুর রহমান আরোও বলেন, “জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে কাউকে অধিকার ভিক্ষা করতে হবে না। সবাইকে তার অধিকার সম্মানের সাথে দেওয়া হবে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে কোর্ট কাচারি অফিস আদালতে কোথাও গিয়ে আপনি লাঞ্চিত হবেন না। কৃষক তার ফসলের নায্য দাম পাবেন, শ্রমিক পাবেন তার ঘামের মজুরি।
ইসকন ইস্যুতে জামায়াত আমির বলেন, একটি উগ্র গোষ্টী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা করেছে। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিবর্তন করতে। কিন্তু এদেশের দায়িত্বশীল মুসলমানরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়নি। আমরা ধৈর্য্য ধরে দেশের মানুষকে শান্ত করেছি। এদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্ট্রান সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিতে বসবাস করবে। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় কাউকে পাহারা দিতে হবে না।
দ্বিতীয় স্বাধীনতা প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, আবু সাঈদ আমাদের এই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান আইকন ও সেনাপতি। তিনি অধিকার চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে পরপর তিনটি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাকে সেলুট জানাই।
জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসাইন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল মহানগরী আমির জহির উদ্দিন বাবর, বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আ. জব্বার, পিরোজপুর জেলা আমির তোফাজ্জল হোসেন ফরিদ, নায়েবে আমির মাসুদ বিন সাইদী, ঝালকাঠি জেলা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট বিএম আমিনুল ইসলাম, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ফরিদুল হক, সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল হাই।