ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগের সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গুসহ মশা-মাছিবাহিত অন্যান্য রোগের সংক্রমণ রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে করা এসংক্রান্ত এক রিট আবেদনে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আশিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মো. শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং একই সঙ্গে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ ৯ জন বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত সপ্তাহে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ বনী ইসমাইল ও মো. মোহসিন। রিটে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আদেশের পর তাদের আইনজীবী মাহিন এম রহমান বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কলকাতায় ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ ছিল। কিন্তু তারা কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। মালয়েশিয়াতেও ডেঙ্গু এখন নিয়ন্ত্রণে। তার বিপরীতে আমাদের দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন। যে কারণে রিট আবেদনটি করা হয়। আদালত রুলসহ নির্দেশনা দিয়েছেন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তাদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মৃত্যু হয়েছে ২২৯ জনের, যা মোট মৃত্যুর ৬৪ শতাংশ। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৭ জন।