জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ, আহত এবং অংশগ্রহণকারী জনগণের কল্যাণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর সই করা এ অধ্যাদেশটি প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নিপীড়নমূলক ও বৈষম্যমূলক নীতির প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে।
স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরও কাঙ্ক্ষিত সুবিচার ও বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায়, জনগণের মধ্যে ক্ষোভ জমতে থাকে। অধ্যাদেশে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে শাসনক্ষম ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, লুটপাট, অর্থ পাচার, এবং নারী ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পায়।
এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে একটি দেশব্যাপী গণ-আন্দোলন শুরু হয়, যা ৫ আগস্ট এক দুর্দমনীয় গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং ক্ষমতাসীন সরকারকে দেশত্যাগে বাধ্য করে।
অধ্যাদেশে বলা হয়, এই অভ্যুত্থানে সহস্রাধিক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা শহীদ হন এবং অগণিত মানুষ আহত হন। তাদের আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন ও ইতিহাসে সংরক্ষণ করা অপরিহার্য।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদ পরিবার ও আহতদের যথোপযুক্ত স্বীকৃতি, সম্মান, কল্যাণ ও পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সংসদ ভেঙে যাওয়ায় এবং পরিস্থিতির জরুরি গুরুত্ব বিবেচনায়, সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ জারি করেছেন।