ইরানের রাজধানী তেহরানজুড়ে ইসরায়েলের টানা হামলার মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই অভিযান ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত চালতে পারে। তবে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে অভিযানের ব্যাপ্তি নির্ধারণে রাজনৈতিক নেতাদের সিদ্ধান্তের ওপর। এদিকে, সোমবারও তেহরানের কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এই হামলার আগে ইরানি নাগরিকদের সরে যেতে এক নজিরবিহীন সতর্কবার্তা জারি করেছিল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলের এক শীর্ষ কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেন, আমাদের হাতে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুর তালিকা আছে, যা আমরা দ্রুত শেষ করতে পারি। কিন্তু যদি তারা সরকারি প্রতীক বা অর্থনৈতিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্য করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে সময় আরও লাগবে।
এই হামলার পেছনে চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত করা, যাতে তারা আবার আলোচনার টেবিলে বসে এবং কঠোর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ইরান মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলকে বার্তা দিয়েছে, তারা হামলা বন্ধ করলে তেহরানও পাল্টা আঘাত বন্ধ করতে প্রস্তুত এবং আলোচনায় ফিরতে চায়। তবে তার জন্য ইসরায়েলকেই প্রথমে থামতে হবে।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ইতোমধ্যে নাতাঞ্জের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে। তবে ফারদো স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা কম।
তেহরানে হামলার আগে একটি নজিরবিহীন সতর্কবার্তা জারি করেছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনীর পারসিয়ান ভাষার মুখপাত্র কামাল পেনহাসি বলেন, প্রিয় নাগরিকগণ, আপনাদের নিরাপত্তার স্বার্থে অনুরোধ করা হচ্ছে তেহরানের ৩ নম্বর জেলার নির্দিষ্ট এলাকা অবিলম্বে খালি করুন।
তিনি জানান, পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী এই এলাকায় অভিযান চালাবে। ঠিক যেমনটি বিগত কয়েকদিন তেহরানের অন্যান্য অংশে অভিযান চালানো হয়েছে।
এই ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই তেহরানের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যম। বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, রাজধানীর পশ্চিমাঞ্চলে একটি সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টা পাল্টি হামলা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমের খবরে উভয়পক্ষের প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।