ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছুটি শেষ, উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী ফিরতি পথেও চাপ

ঈদের ছুটি শেষ। কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখে ফিরতি পথেও যানবাহনের ব্যাপক চাপ পড়েছে। যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সয়দাবাদ গোলচত্বর থেকে কড্ডা পর্যন্ত থেমে থেমে ঢাকা অভিমুখে চাপ দৃশ্যমান।

শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ের সয়দাবাদ থেকে কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশে থেমে থেমে ফিরতি যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। যমুনা সেতু পশ্চিম টোল প্লাজার টোল কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রিত হারে ঢাকার দিকে যান পারাপার করায় সেতুর পশ্চিম পাড়ে চাপ সৃষ্টি হয়, যা সরেজমিনেও দেখা যায়। যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খায় সেতু পশ্চিম থানা ও ট্রাফিক পুলিশ।

সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকা অভিমুখে যানবাহন পারাপারে সাতটি বুথই খুলে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত যানবাহন প্রতিটি বুথে ভিড় করে। হুড়োহুড়ি করে আগে যাবার প্রতিযোগিতা দেখা যায় চালকদের মাঝে। যেখানে সাতটি যানবাহন একসাথে টোল দিয়ে ঢাকার দিকে যেতে পারবে, সেখানে ভীড় করে কমপক্ষে সাতশো যানবাহন। এ কারণে দুপুর থেকেই থেমে থেমে যানবাহনের ধীরগতি দেখা যায়। তবে এখানে যানবাহনের পেছনে পেছনে যানবাহন থাকলেও কোন যানজট নেই।

যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল সন্ধ্যায় বলেন, ফিরতি পথেও চালকদের হুড়োহুড়ি কারণে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। পশ্চিম টোলপ্লাজায় নিয়ন্ত্রিতভাবে যানবাহন ছাড়ায় এক ধরনের চাপের যানজট হয়। সেতুর দু’পারের জেলা ও ট্রাফিক পুলিশ নিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

কড্ডা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টিআই সাইফুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় বলেন, সেতুর পশ্চিম টোলপ্লাজা থেকে কড্ডা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারজুড়েই ঢাকা অভিমুখে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। জেলার ট্রাফিক পুলিশ এখানে দায়িত্বে আছি। পোশাক শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য একসঙ্গে যাত্রা করায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

এদিকে কর্মস্থলে ফেরার যাত্রায় দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শুক্রবার যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। গাবতলীগামী শাপলা-সিহাব দম্পতি বলেন, সকালে এসেছি, বাসের খোঁজ-খবর নেই। হাজার টাকার নিচে কেউ যাবে না। ভাড়া দিয়ে কীভাবে যাব। চন্দ্রা (চান্দুরা) পর্যন্ত যেতে ২০০-৩০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। অথচ সেখানে বাসের সুপারভাইজার-হেল্পাররা ৮০০-১০০০ টাকা চাচ্ছেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক আকাশ মাহমুদ বলেন, সকাল ১০টায় এসেছি। দুপুর দুইটা পর্যন্ত গাড়ি পাইনি। ভাড়া শুনলে মাথা ঘুরে যায়। আরেক যাত্রী আব্বাস বলেন, ভাড়া তো বেশি নিচ্ছে। সরকার এত চেষ্টা করছে। তারপরও পেরে উঠছে না।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, হাটিকুমরুল মোড়ে বাস ঠেকিয়ে ঠেকিয়ে নির্দিষ্ট ভাড়ায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকার দিকে তুলে দিয়েছি। পথে যদি অতিরিক্ত ভাড়া হাতিয়ে নেয়, তখন আমরা কি করতে পারি।

সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ভাড়ার বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি কেউই।

সিরাজগঞ্জ জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (অ্যাডমিন) মো. মোফাখারুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আমাদের অবস্থা দুরহ। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক যাত্রীদের অনেক কষ্ট বেড়েছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সেতু কর্তৃপক্ষ থেমে থেমে নিয়ন্ত্রিতভাবে যান পারাপার করায় এমন সমস্যা হয়েছে।

জনপ্রিয়

ছুটি শেষ, উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী ফিরতি পথেও চাপ

প্রকাশিত: ১৮ ঘন্টা আগে

ঈদের ছুটি শেষ। কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখে ফিরতি পথেও যানবাহনের ব্যাপক চাপ পড়েছে। যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সয়দাবাদ গোলচত্বর থেকে কড্ডা পর্যন্ত থেমে থেমে ঢাকা অভিমুখে চাপ দৃশ্যমান।

শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ের সয়দাবাদ থেকে কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশে থেমে থেমে ফিরতি যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। যমুনা সেতু পশ্চিম টোল প্লাজার টোল কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রিত হারে ঢাকার দিকে যান পারাপার করায় সেতুর পশ্চিম পাড়ে চাপ সৃষ্টি হয়, যা সরেজমিনেও দেখা যায়। যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খায় সেতু পশ্চিম থানা ও ট্রাফিক পুলিশ।

সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকা অভিমুখে যানবাহন পারাপারে সাতটি বুথই খুলে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত যানবাহন প্রতিটি বুথে ভিড় করে। হুড়োহুড়ি করে আগে যাবার প্রতিযোগিতা দেখা যায় চালকদের মাঝে। যেখানে সাতটি যানবাহন একসাথে টোল দিয়ে ঢাকার দিকে যেতে পারবে, সেখানে ভীড় করে কমপক্ষে সাতশো যানবাহন। এ কারণে দুপুর থেকেই থেমে থেমে যানবাহনের ধীরগতি দেখা যায়। তবে এখানে যানবাহনের পেছনে পেছনে যানবাহন থাকলেও কোন যানজট নেই।

যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল সন্ধ্যায় বলেন, ফিরতি পথেও চালকদের হুড়োহুড়ি কারণে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। পশ্চিম টোলপ্লাজায় নিয়ন্ত্রিতভাবে যানবাহন ছাড়ায় এক ধরনের চাপের যানজট হয়। সেতুর দু’পারের জেলা ও ট্রাফিক পুলিশ নিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

কড্ডা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টিআই সাইফুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় বলেন, সেতুর পশ্চিম টোলপ্লাজা থেকে কড্ডা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারজুড়েই ঢাকা অভিমুখে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। জেলার ট্রাফিক পুলিশ এখানে দায়িত্বে আছি। পোশাক শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য একসঙ্গে যাত্রা করায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

এদিকে কর্মস্থলে ফেরার যাত্রায় দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শুক্রবার যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। গাবতলীগামী শাপলা-সিহাব দম্পতি বলেন, সকালে এসেছি, বাসের খোঁজ-খবর নেই। হাজার টাকার নিচে কেউ যাবে না। ভাড়া দিয়ে কীভাবে যাব। চন্দ্রা (চান্দুরা) পর্যন্ত যেতে ২০০-৩০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। অথচ সেখানে বাসের সুপারভাইজার-হেল্পাররা ৮০০-১০০০ টাকা চাচ্ছেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক আকাশ মাহমুদ বলেন, সকাল ১০টায় এসেছি। দুপুর দুইটা পর্যন্ত গাড়ি পাইনি। ভাড়া শুনলে মাথা ঘুরে যায়। আরেক যাত্রী আব্বাস বলেন, ভাড়া তো বেশি নিচ্ছে। সরকার এত চেষ্টা করছে। তারপরও পেরে উঠছে না।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, হাটিকুমরুল মোড়ে বাস ঠেকিয়ে ঠেকিয়ে নির্দিষ্ট ভাড়ায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকার দিকে তুলে দিয়েছি। পথে যদি অতিরিক্ত ভাড়া হাতিয়ে নেয়, তখন আমরা কি করতে পারি।

সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ভাড়ার বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি কেউই।

সিরাজগঞ্জ জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (অ্যাডমিন) মো. মোফাখারুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আমাদের অবস্থা দুরহ। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক যাত্রীদের অনেক কষ্ট বেড়েছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সেতু কর্তৃপক্ষ থেমে থেমে নিয়ন্ত্রিতভাবে যান পারাপার করায় এমন সমস্যা হয়েছে।