চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানার গুদাম থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের জন্য তৈরি করা ২০ হাজার ৩০০টি পোশাক জব্দের কথা বলছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ বলছে, এসব পোশাক (ইউনিফরম) সশস্ত্র সংগঠন ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের‘ (কেএনএফ) সদস্যদের।
ছয়দিন আগে এ অভিযান চালানো হলেও বিষয়টি জানাজানি হয় রোববার। বায়েজিদ বোস্তামি থানার নেয়ারহাট ও মোজাফ্ফরনগর এলাকায় ‘রিংভো অ্যাপারেলসের’ গুদাম থেকে এসব পোশাক জব্দ করা হয়। ১৭ মে রাত ২টা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- সাহেদুল ইসলাম (২৫), গোলাম আজম (৪১) ও নিয়াজ হায়দার (৩৯)। প্রথমজন রিংভো অ্যাপারেলসের মালিক। বাকি দুজন পোশাক তৈরির ক্রয়াদেশ এনেছিলেন।
১৮ মে এ ঘটনায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর-দক্ষিণ বিভাগের এসআই মো. ইকবাল হোসেন বায়েজিদ বোস্তামি থানায় চারজনকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, বায়েজিদ থানার ওসি এবং গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন দিলেও তারা ধরেননি। মামলার এজাহার এবং জব্দ তালিকার অনুলিপি থেকে জানা গেছে, গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নগরীর বায়েজিদ এলাকা থেকে সায়েদুল ইসলাম এবং হালিশহর ছোটপুল এলাকা থেকে গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দারকে গ্রেপ্তার করে।
‘‘তাদের দেওয়া তথ্য মতে বায়েজিদ থানাধীন মোজাফফর নগর এলাকায় অবস্থিত রিংভো অ্যাপারেলসের গোডাউন থেকে ৩২০ বস্তা এবং নয়ারহাট এলাকায় কারখানা থেকে ২৬০ বস্তা মিলিয়ে মোট ২০ হাজার ৩০০টি পোশাক জব্দ করা হয়।‘‘মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুই কোটি টাকা দিয়ে মংহলাসিন মারমা এবং কুকি-চীনের সদস্যদের কাছ থেকে গত মার্চ মাসে এসব পোশাক তৈরির অর্ডার নেওয়া হয়। রিংভো অ্যাপারেলসের প্রডাকশন ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামানকে এসব পোশাক জব্দের সাক্ষী রাখা হয়েছে। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসব পোশাক তৈরির বিষয়ে আমরা জানি না। আমরা সাব-কন্ট্রাক্টের কাজ করে থাকি। আমরা কোনো বড় প্রতিষ্ঠান না।
“একটি ফ্লোরে ৫০-৬০টি মেশিন নিয়ে কারখানাটি চালানো হয়। এসব পোশাক কাদের, তাও আমরা জানি না।’ বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামে এই সশস্ত্র সংগঠনের অস্তিত্ব সামনে আসে ২০২২ সালের শুরুর দিকে। বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে এ সংগঠন গঠন করার কথা বলা হলেও সেখানে বম জনগোষ্ঠীর কিছু লোক রয়েছে। সে কারণে সংগঠনটি পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিতি পায়।