শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ তাঁদের রূপপুর প্রকল্প ও গ্রিন সিটি আবাসিক এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছানের স্বাক্ষরিত আদেশে শনিবার রাতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। প্রকল্পের সাইড ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চাকরিচ্যুতদের মধ্যে আছেন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারী ব্যবস্থাপক, উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক ও একজন টেকনিশিয়ান। তাদের বিরুদ্ধে প্রকল্প এলাকায় আন্দোলন, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভের মাধ্যমে নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পারমাণবিক স্থাপনা হিসেবে এটি আন্তর্জাতিক নজরদারির আওতায় থাকায় কোনো ধরনের আন্দোলন বা বিশৃঙ্খলা প্রকল্পের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
চাকরিচ্যুতদের একজন রুবেল হোসেন দাবি করেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, আন্দোলনকারীরা নিয়ম না মেনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারকে বিপদে ফেলতে কাজ করছেন বলেই মনে হয়েছে।
সূত্রে আরও বলা হয়, এনপিসিবিএলের কর্মীরা অন্যান্য সরকারি কোম্পানির তুলনায় অনেক বেশি বেতন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন, তবুও তারা বিক্ষোভ করেছেন, যা প্রকল্পের নিরাপত্তা ও সুনামকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম জানান, নিউক্লিয়ার প্রকল্প এলাকায় এমন ঘটনা বিশ্বে বিরল এবং এটি চালনার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করে এই প্রকল্পের একটি অংশ, যা ৭ মে পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে চলেছে।