ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় শাহে আলম মুরাদ ও আনিসুর রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির চট্টগ্রামের চকবাজারে নালায় পড়ে ৬ মাসের শিশু নিখোঁজ ১৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা: সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে রাখাইনদের প্রাচীন ‘জলকেলি’ উৎসব: মিলন, আত্মশুদ্ধি আর মানবিকতার বার্তা জুলাই আন্দোলনে শহীদ ইমনের মরদেহ উত্তোলন: আদালতের নির্দেশে নতুন তদন্তের সূচনা

সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের মোকামছড়া সীমান্তের বিপরীতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের নথরাই পুঞ্জি এলাকায় সুপারি চুরি করতে গিয়ে খাসিয়ার গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তির নাম কুটি মিয়া (৫০)। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের মৃত মনিরুল্লার ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সীমান্ত থেকে ৭ কিলোমিটার ভেতরে মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলার মোশাররম থানার নথরাই পুঞ্জিতে এ ঘটনা ঘটে।

 

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিষয়টি বিএসএফকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির।

 

তবে নিরাপদে পালিয়ে এসেছে একই গ্রামের ৬ জন। তারা হলেন- আইয়ুব আলীর ছেলে হানিফ মিয়া (৩০), মৃত এরাবুল্লাহ’র ছেলে আকবর আলী (৩১), জরিফ উদ্দিন (৪৫), অজুদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৫), ময়না মিয়ার ছেলে ইসহাক মিয়া (৫০), মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া (৫৫)।

 

বিজিবি ও পুলিশ জানিয়েছে, পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের ৭ জন গোপনে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের প্রায় ৭ কিলোমিটার ভেতরে সুপারী চুরি করতে গিয়েছিল। ৬ জন নিরাপদে ফিরলেও কুটি মিয়া নামের একজন নিখোঁজ রয়েছে। স্থানীয়রা খাসিয়াদের গুলিতে কুটি মিয়া নিহত হয়েছে বলে দাবি করলেও সঠিক তথ্য জানা যায়নি। ফেরত আসা খোকন মিয়া ও হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে বিজিবির চোরাকারবারী মামলা রয়েছে। কুটি মিয়া ও জরিফ উদ্দিন চোরাকারবারী।

 

বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে দোয়ারাবাজার সীমান্তের পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের কুটি মিয়াসহ ৭ জন পেকপাড়া বিওপির সীমান্ত পিলার ১২৩০/২-এস বিপরীতে ভারতের ৭ কিলোমিটার ভেতরে নথরাই পুঞ্জির সুপারি বাগানে সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল। এ সময় বাগানের মালিক ভারতীয় খাসিয়ারা তাদেরকে ধাওয়া দিলে ৬ জন বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। কিন্তু কুটি মিয়া সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পালিয়ে আসা ৬ জন বিকেলে বিষয়টি কুটি মিয়ার বাড়িতে জানায়। পরে কুটি মিয়ার আত্মীয়-স্বজন নথরাই এলাকায় গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবির বৃহস্পতিবার রাতেই কুটি মিয়ার বাড়িতে যায়।

 

কুটি মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম বলেন, আমার স্বামী বৃহস্পতিবার সকালে গরুর ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এখন পর্যন্ত তার কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না। কোথায় আছে জানি না। ভারতে সুপারি আনতে গিয়ে খাসিয়াদের গুলিতে মারা যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি।

 

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক বলেন, পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের কুটি মিয়াসহ ৭ জন ভারতের ৭ কিলোমিটার ভেতরে সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল। ৬ জন ফিরে আসলেও কুটি মিয়া নাকি খাসিয়াদের গুলিতে মারা গেছেন। তবে সঠিক তথ্য জানা যায়নি। পরিবারের লোকজন স্বীকার করেছে কুটি মিয়া ভারতে সুপারি আনতে গিয়েছিল। কুটি মিয়া এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

 

বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের প্রায় ৭ কিলোমিটার ভেতরে। সবাই সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিএসএফের ১১০ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় খাসিয়াদের সঙ্গে বাংলাদেশি চোরাকারবারিদের কলহ হয়েছে। কিন্তু কেউ হতাহত হয়নি, সব চোরাকারবারিরা নাকি বাংলাদেশে ফেরত এসেছে। তবে কুটি মিয়া নিখোঁজ থাকার বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। বিএসএফ খোঁজ-খবর নিচ্ছে। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার দায়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেরত আসা সব চোরাকারবারি আত্মগোপনে রয়েছেন।

জনপ্রিয়

বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি

সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

প্রকাশিত: ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের মোকামছড়া সীমান্তের বিপরীতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের নথরাই পুঞ্জি এলাকায় সুপারি চুরি করতে গিয়ে খাসিয়ার গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তির নাম কুটি মিয়া (৫০)। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের মৃত মনিরুল্লার ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সীমান্ত থেকে ৭ কিলোমিটার ভেতরে মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলার মোশাররম থানার নথরাই পুঞ্জিতে এ ঘটনা ঘটে।

 

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিষয়টি বিএসএফকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির।

 

তবে নিরাপদে পালিয়ে এসেছে একই গ্রামের ৬ জন। তারা হলেন- আইয়ুব আলীর ছেলে হানিফ মিয়া (৩০), মৃত এরাবুল্লাহ’র ছেলে আকবর আলী (৩১), জরিফ উদ্দিন (৪৫), অজুদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৫), ময়না মিয়ার ছেলে ইসহাক মিয়া (৫০), মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া (৫৫)।

 

বিজিবি ও পুলিশ জানিয়েছে, পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের ৭ জন গোপনে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের প্রায় ৭ কিলোমিটার ভেতরে সুপারী চুরি করতে গিয়েছিল। ৬ জন নিরাপদে ফিরলেও কুটি মিয়া নামের একজন নিখোঁজ রয়েছে। স্থানীয়রা খাসিয়াদের গুলিতে কুটি মিয়া নিহত হয়েছে বলে দাবি করলেও সঠিক তথ্য জানা যায়নি। ফেরত আসা খোকন মিয়া ও হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে বিজিবির চোরাকারবারী মামলা রয়েছে। কুটি মিয়া ও জরিফ উদ্দিন চোরাকারবারী।

 

বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে দোয়ারাবাজার সীমান্তের পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের কুটি মিয়াসহ ৭ জন পেকপাড়া বিওপির সীমান্ত পিলার ১২৩০/২-এস বিপরীতে ভারতের ৭ কিলোমিটার ভেতরে নথরাই পুঞ্জির সুপারি বাগানে সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল। এ সময় বাগানের মালিক ভারতীয় খাসিয়ারা তাদেরকে ধাওয়া দিলে ৬ জন বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। কিন্তু কুটি মিয়া সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পালিয়ে আসা ৬ জন বিকেলে বিষয়টি কুটি মিয়ার বাড়িতে জানায়। পরে কুটি মিয়ার আত্মীয়-স্বজন নথরাই এলাকায় গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবির বৃহস্পতিবার রাতেই কুটি মিয়ার বাড়িতে যায়।

 

কুটি মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম বলেন, আমার স্বামী বৃহস্পতিবার সকালে গরুর ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এখন পর্যন্ত তার কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না। কোথায় আছে জানি না। ভারতে সুপারি আনতে গিয়ে খাসিয়াদের গুলিতে মারা যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি।

 

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক বলেন, পেকপাড়া মোকামছড়া গ্রামের কুটি মিয়াসহ ৭ জন ভারতের ৭ কিলোমিটার ভেতরে সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল। ৬ জন ফিরে আসলেও কুটি মিয়া নাকি খাসিয়াদের গুলিতে মারা গেছেন। তবে সঠিক তথ্য জানা যায়নি। পরিবারের লোকজন স্বীকার করেছে কুটি মিয়া ভারতে সুপারি আনতে গিয়েছিল। কুটি মিয়া এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

 

বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের প্রায় ৭ কিলোমিটার ভেতরে। সবাই সুপারি চুরি করতে গিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিএসএফের ১১০ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় খাসিয়াদের সঙ্গে বাংলাদেশি চোরাকারবারিদের কলহ হয়েছে। কিন্তু কেউ হতাহত হয়নি, সব চোরাকারবারিরা নাকি বাংলাদেশে ফেরত এসেছে। তবে কুটি মিয়া নিখোঁজ থাকার বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। বিএসএফ খোঁজ-খবর নিচ্ছে। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার দায়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেরত আসা সব চোরাকারবারি আত্মগোপনে রয়েছেন।