একসময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর কথা শুনলেই কল্পবিজ্ঞানের দুনিয়ার কথা মনে পড়ত। অনেকেই ভাবতেন, এ প্রযুক্তি ভবিষ্যতের জন্যই বরাদ্দ। অথচ কয়েক বছরের মধ্যেই সেই ‘ভবিষ্যৎ’ বাস্তবে এসে হাজির হয়েছে, তাও আমাদের হাতের মুঠোয়।
২০২২ সালের নভেম্বরে ওপেনএআই যখন চ্যাটজিপিটি চালু করে, তখন কেউ ভাবেনি এটি এত দ্রুত বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। বিশেষ করে ভারতের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশে এআই প্রযুক্তির প্রতি এমন ব্যাপক আগ্রহ অনেককেই চমকে দিয়েছে।
ওপেনএআই-এর মুখ্য অপারেটিং অফিসার ব্র্যাড লাইটক্যাপ জানিয়েছেন, বর্তমানে চ্যাটজিপিটি বিশ্বের অনেক দেশে ব্যবহৃত হলেও, ভারত এই মুহূর্তে তাদের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বাজার। সম্প্রতি চ্যাটজিপিটি-তে যুক্ত হয়েছে ‘স্টুডিও জিবলি’ স্টাইলের অ্যানিমেটেড ছবি তৈরির ফিচার, যা ঘিরে নেটিজেনদের মধ্যে দারুণ উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা নিজেদের চেহারা বা কল্পনার চরিত্র এই স্টাইলে তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন।
ব্র্যাড আরও জানান, গত সপ্তাহেই ১৩০ মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী মিলে ৭০০ মিলিয়নেরও বেশি ছবি তৈরি করেছেন এই প্ল্যাটফর্মে, যা ওপেনএআই-এর ইতিহাসে একটি রেকর্ড।
ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যানও ভারতের প্রযুক্তিনির্ভর মনোভাবের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) তিনি লেখেন, “ভারত এখন বিশ্বের বাজারকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।” তিনি নিজের একটি এআই-জেনারেটেড ছবি শেয়ার করেন, যেখানে তাঁকে দেখা যায় ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি পরে—এই অভিব্যক্তি শুধু প্রযুক্তির বিস্তারই নয়, বরং এআই-এর সঙ্গে আবেগ ও সংস্কৃতির গভীর সংযোগকেও তুলে ধরে।
বিশ্বজুড়ে যখন দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তর ঘটছে, তখন ভারতের মতো তরুণ-প্রবণ দেশে এআই প্রযুক্তির প্রসার নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, এমনকি কাস্টমার সার্ভিস—সবক্ষেত্রেই চ্যাটজিপিটি ও অনুরূপ এআই প্রযুক্তি এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ভারত আরও গভীরভাবে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করে, তাহলে আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে ভারতের অবদান হতে পারে বিশ্বে অন্যতম।