প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের নতুন অধ্যায় উন্মোচন হতে পারে।
গিজার পিরামিডের নিচে একটি বিশাল গোপন নগরী আবিষ্কারের দাবি করেছেন ইতালি ও স্কটল্যান্ডের গবেষকরা। তারা সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা প্রাচীন মিশরের ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
গবেষকরা জানান, পিরামিডের নিচে পাওয়া এই ভূগর্ভস্থ কাঠামো পিরামিডগুলোর তুলনায় দশ গুণ বড় হতে পারে। শনিবার (২২ মার্চ) জিও টিভিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষকরা রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিরামিডগুলোর নিচের মাটির গভীরে উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি তৈরি করেছেন। এই পদ্ধতি সমুদ্রের তলদেশ ম্যাপিং করার মতোই ছিল।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আটটি উল্লম্ব সিলিন্ডার আকৃতির কাঠামোর সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২,১০০ ফুট গভীরে বিস্তৃত। এর নিচে আরও ৪,০০০ ফুট গভীর পর্যন্ত অজানা স্থাপনার অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে, এই গবেষণাটি এখনও স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পর্যালোচনা করা হয়নি।
গবেষকরা এই আবিষ্কারকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে অনেক বিশেষজ্ঞ এতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ডেনভারের ইউনিভার্সিটির রাডার বিশেষজ্ঞ ও প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক লরেন্স কনিয়ার্স জানিয়েছেন, এই প্রযুক্তি এত গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম নয়, তাই ভূগর্ভস্থ নগরী থাকার ধারণা “অতি অতিরঞ্জিত” হতে পারে। তিনি আরও বলেন, গিজার পিরামিডের নিচে ছোটখাটো সুড়ঙ্গ বা কক্ষ থাকতে পারে, যা প্রাচীন মানুষের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।
অধ্যাপক কনিয়ার্স আরও উল্লেখ করেন, মায়া সভ্যতা সহ প্রাচীন মেসোআমেরিকার জনগণ তাদের পিরামিডগুলোর নিচে গুহা বা সুড়ঙ্গের প্রবেশদ্বার তৈরি করত, যেগুলো তাদের ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তার মতে, গিজার পিরামিডের নিচে পাওয়া কাঠামোগুলোও হয়তো এমন কিছু হতে পারে।
এখনো এই গবেষণাটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পর্যালোচনার অপেক্ষায় রয়েছে। যদি এটি সত্যি হয়, তবে এটি প্রাচীন মিশরের ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, যা গবেষণার নতুন দিশা দেখাতে পারে।