আগামী (২০২৫-২৬) অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পূর্বে বুধবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় শীর্ষস্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদকরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছেন। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত এবং দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হয়।
বৈঠকে, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আকার ও ভাতা বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমান মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের আয় এবং ক্রয়ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে, তাই টিসিবির কার্যক্রম বৃদ্ধি করে গরিবদের সাহায্য করা উচিত।”
দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ উল্লেখ করেন, “বেসরকারি বিনিয়োগের অভাব এবং কর্মসংস্থানের সংকট দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কাটিয়ে ওঠার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।” তিনি রাজস্ব আদায়ে আরও মনোযোগী হতে এবং কর আদায় ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমানও কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স খাতের উন্নতির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করতে রপ্তানি খাতের উন্নতি এবং করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।”
এছাড়া, সমকালের উপ-সম্পাদক জাকির হোসেন এবং ইন্ডিপেন্ডেট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শামীম জাহিদী কর ব্যবস্থায় সংস্কারের দাবি জানান। তারা বলেন, “কালো টাকা এবং সঠিক করদাতাদের মধ্যে পার্থক্য না থাকলে ভালো ব্যবসায়ীরা উৎসাহিত হতে পারেন না। এ বিষয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ সময় বলেন, “বাজেটটি বর্তমান অগ্রাধিকার এবং জরুরি বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে প্রণীত হবে, তবে মেগা প্রকল্পের কোনো স্থান থাকবে না। আমাদের সীমিত সম্পদ নিয়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।”
এছাড়া, তিনি এলডিসি (LDC) উত্তরণের জন্য আরও প্রস্তুতির প্রয়োজন এবং দুর্নীতি কমানোর জন্য ব্যয় নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, “দেশের সামাজিক বৈষম্য কমাতে হবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।”
সর্বোপরি, প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে, নতুন বাজেটটি বাস্তবসম্মত এবং কল্যাণমুখী হতে হবে, যাতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত হয়।