রাজধানীর উত্তরা এলাকায় র্যাব পরিচয়ে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর কোটি টাকার ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া নগদ অর্থের একটি অংশ ও ব্যবহৃত হাইস গাড়িও উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেন উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মুহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত গাড়ির নম্বর শনাক্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এ ঘটনায় বিস্তারিত জানাতে আজ ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কী ঘটেছিল?
গত শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে নগদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল খালেক নয়নের নির্দেশে চারজন কর্মী দুটি মোটরসাইকেলে করে ১ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা নিয়ে রওনা দেন। তারা যাচ্ছিলেন ১৩ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর বাসায়, যেখানে অবস্থিত নগদের উত্তরা ডিস্ট্রিবিউটর অফিস।
তবে পথে ১৩ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসার সামনে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা কালো রঙের একটি হাইস মাইক্রোবাস এসে তাদের গতিরোধ করে। গাড়ি থেকে র্যাব লেখা কালো কটি পরিহিত ৮-১০ জন অস্ত্রধারী নামেন এবং নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের মুখে চারজন কর্মীকে জিম্মি করে টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তিনজনকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হলেও একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তার কাছে থাকা ব্যাগে ছিল মাত্র ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
পুলিশ জানায়, ছিনতাই হওয়া অর্থ ছিল নগদের তুরাগ ও উত্তরা ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের দৈনিক কালেকশনের অংশ। ঘটনার পরপরই উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও র্যাব যৌথ তদন্ত শুরু করে।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয় নগদের উত্তরা অফিসের ম্যানেজার রিয়াজুল ইসলাম, সুপারভাইজার সঞ্জয় কুমার, কর্মকর্তা ওমর আহমেদ এবং তুরাগ অফিসের ম্যানেজার মাসুদুর রহমানকে। মামলার বাদী আব্দুর রহমানকেও ডিবি পুলিশ ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।