ঢাকা , বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
হালুয়াঘাটে আগুনে পুড়ে ছাই ১২ দোকান ইসরায়েলের আকাশ ইরানের ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে’: আইআরজিসি ইরানের ‘সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে’ হামলার দাবি ইসরায়েলের ইরানে ইসরায়েলি হামলায় ৫ দিনে নিহত প্রায় ৬০০ জন: মানবাধিকার সংস্থা তেহরানে ৪০০ বাংলাদেশিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু বিজ্ঞাপন বিল পরিশোধে অনুমতি ছাড়াই ডলার পরিশোধের সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে অধ্যাদেশ জারি সমান আচরণ করছে সরকার, দাবি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত হবে: ড. আলী রীয়াজ বাংলাদেশিদের জন্য অনলাইনে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা আবেদন চালু: ঢাকায় হাইকমিশনার

ময়মনসিংহ বিভাগের আদালতগুলোতে মামলার জট, নিঃস্ব বিচারপ্রার্থীরা

ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আদালতগুলোতে মারাত্মক মামলাজট সৃষ্টি হয়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা ও বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী। অনেকেই ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় বছরের পর বছর ঘুরেও হতাশ।

 

ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোক্ষপুর এলাকার আব্দুল মান্নান ১৯৯১ সালে জমি সংক্রান্ত একটি বাটোয়ারা মামলা করেন। আজ প্রায় ৩৪ বছর পরও তার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। মান্নান বলেন, “তিনজন আইনজীবী মারা গেছেন, আমিও মরার পথে। এখন পর্যন্ত জমির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পাইনি, মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।”

 

ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজের অধীন ২০টি আদালতে বর্তমানে প্রায় ৬৯ হাজার ৭২৮টি দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা আরও ২৮ হাজার ২৬টি।

 

জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনায়ও একই চিত্র। জামালপুরের ২৭টি আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। শেরপুরে মে ২০২৫ পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৬৬টি। নেত্রকোনায় ৩১ হাজার ৬১৭টি মামলা এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

 

ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবী এম এ হান্নান খান বলেন, “অনেক মিথ্যা মামলার কারণেও মামলা বাড়ে। যদি থানা পর্যায়ে মামলা গ্রহণের আগে প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করা হয়, তাহলে অনেক মামলা কমে যাবে।”

 

জামালপুর জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মামলা নিষ্পত্তির গতি বেড়েছে।”

 

ময়মনসিংহের জিপি অ্যাডভোকেট মো. আজহারুল হক জানান, “এখন প্রতি মাসে অনেক বেশি মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। বিচারকরা দ্রুত রায় দিচ্ছেন এবং আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি মামলাজট কমাতে।”

 

আইনজীবীরা জানান, প্রতিদিন ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আদালতগুলোতে বিচারসংক্রান্ত কাজে ৫ হাজারের বেশি মানুষ আসেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্মিলিত উদ্যোগই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জনপ্রিয়

হালুয়াঘাটে আগুনে পুড়ে ছাই ১২ দোকান

ময়মনসিংহ বিভাগের আদালতগুলোতে মামলার জট, নিঃস্ব বিচারপ্রার্থীরা

প্রকাশিত: ১২ ঘন্টা আগে

ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আদালতগুলোতে মারাত্মক মামলাজট সৃষ্টি হয়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা ও বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী। অনেকেই ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় বছরের পর বছর ঘুরেও হতাশ।

 

ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোক্ষপুর এলাকার আব্দুল মান্নান ১৯৯১ সালে জমি সংক্রান্ত একটি বাটোয়ারা মামলা করেন। আজ প্রায় ৩৪ বছর পরও তার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। মান্নান বলেন, “তিনজন আইনজীবী মারা গেছেন, আমিও মরার পথে। এখন পর্যন্ত জমির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পাইনি, মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।”

 

ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজের অধীন ২০টি আদালতে বর্তমানে প্রায় ৬৯ হাজার ৭২৮টি দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা আরও ২৮ হাজার ২৬টি।

 

জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনায়ও একই চিত্র। জামালপুরের ২৭টি আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। শেরপুরে মে ২০২৫ পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৬৬টি। নেত্রকোনায় ৩১ হাজার ৬১৭টি মামলা এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

 

ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবী এম এ হান্নান খান বলেন, “অনেক মিথ্যা মামলার কারণেও মামলা বাড়ে। যদি থানা পর্যায়ে মামলা গ্রহণের আগে প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করা হয়, তাহলে অনেক মামলা কমে যাবে।”

 

জামালপুর জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মামলা নিষ্পত্তির গতি বেড়েছে।”

 

ময়মনসিংহের জিপি অ্যাডভোকেট মো. আজহারুল হক জানান, “এখন প্রতি মাসে অনেক বেশি মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। বিচারকরা দ্রুত রায় দিচ্ছেন এবং আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি মামলাজট কমাতে।”

 

আইনজীবীরা জানান, প্রতিদিন ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আদালতগুলোতে বিচারসংক্রান্ত কাজে ৫ হাজারের বেশি মানুষ আসেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্মিলিত উদ্যোগই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।