ধর্ষণ শব্দটি এড়িয়ে চলার বিষয়ে বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার (১৭ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ দুঃখ প্রকাশ করেন। এর আগে শনিবার তিনি গণমাধ্যমের প্রতি ‘ধর্ষণ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ শব্দ ব্যবহার করার অনুরোধ জানান, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন প্রসঙ্গে আলোচনাকালে ধর্ষণকে বৃহত্তর পরিসরে নির্যাতন হিসেবে অভিহিত করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ মনঃক্ষুণ্ন হলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
শনিবার তিনি গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানান, ‘ধর্ষণ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ শব্দ ব্যবহার করতে। তিনি বলেন, “আমি দুটো শব্দ খুব অপছন্দ করি, এর মধ্যে একটি হলো ধর্ষণ। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটা ব্যবহার করবেন না। আপনারা ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নিপীড়ন’ বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।”
ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “শেখ মো. সাজ্জাত আলী ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন। বিষয়টি কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তার এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত, প্রত্যাহার করা উচিত।”
রোববার রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলে, “ধর্ষণ ধর্ষণই, তা ৮ বছর বয়সী বা ৮০ বছর বয়সী যে কোনো বৃদ্ধাকেই করা হোক না কেন। এই ধরনের জঘন্য অপরাধকে তার যথাযথ নামেই ডাকা উচিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহিংসতা সহ্য করবে না।”
ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য সমাজের বিভিন্ন স্তরে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে নারী অধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধকে তার যথাযথ নামে ডাকার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বশীল ব্যক্তির এমন মন্তব্যে জনমনে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ পেয়েছে।