৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আশায় বুক বেঁধেছিলেন জেলেরা—ভাবছিলেন রূপালী ইলিশে ভরবে জাল, ফিরবে স্বস্তি। কিন্তু সমুদ্রে পা দিতেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈরী আবহাওয়া আর উঁচু ঢেউ। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, গলাচিপা ও কলাপাড়ার জেলেরা জানান, অনেকে এখনও সমুদ্রে নামার সাহস পাচ্ছেন না।
চরমোন্তাজের জেলে রফিক হাওলাদার জানান, লক্ষাধিক টাকার বাজার করে গভীর সমুদ্রে গেলেও জালে তেমন মাছ ধরা পড়ছে না। ঢেউয়ের কারণে ঠিকভাবে জাল ফেলাই যাচ্ছে না। ফলে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মেরিন ফিশারিজ অফিসার এস এম শাহাদাত হোসেন রাজু জানান, নিষেধাজ্ঞার পর মাছ থাকার সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জেলেরা কার্যকরভাবে জাল ফেলতে পারছেন না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে মাছ ধরা ও বাড়ার আশা করা হচ্ছে।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মিলিয়ে বছরে প্রায় ২৫০–২৭০ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকে উপকূলীয় এলাকায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন পটুয়াখালী, ভোলা ও বরগুনার নিম্নআয়ের মাছ নির্ভর পরিবারগুলো। আয় বন্ধ থাকায় এসব পরিবারে ঋণের বোঝা বাড়ছে।
জেলেরা জানান, পেশা ছেড়ে দিতে চাইলেও বিকল্প কোনো উপার্জনের ব্যবস্থা নেই। মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে বাজার করতে হচ্ছে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন ফিশারিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মাছ রক্ষা সম্ভব নয়, যদি জেলেদের বাঁচিয়ে রাখা না যায়।
তিনি বলেন, ‘জেলেদের জন্য “লাইভলি হুড সিকিউরিটি প্যাকেজ” চালু করা জরুরি, যাতে তাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও বিকল্প আয়ের উৎস নিশ্চিত হয়। মানুষ বাঁচলেই প্রকৃতি বাঁচবে।’