ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেছেন যে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখে সেখানকার ঘরবাড়ি ধ্বংস করার পেছনে উদ্দেশ্য হলো—ফিলিস্তিনিদের এমন পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়া যাতে তারা আর ফিরে যেতে না পারে। ইসরাইলি পার্লামেন্ট (নেসেট) এর পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটির এক গোপন বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। বুধবার (১৪ মে) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।
রোববার অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথোপকথনের কিছু অংশ ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলোতে ফাঁস হয়েছে। এতে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা গাজায় আরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস করছি যাতে ফিলিস্তিনিরা ফিরে যাওয়ার মতো কিছু না পায়। এর একমাত্র পরিষ্কার ফলাফল হবে—তাদের গাজা উপত্যকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রধান সমস্যা হলো—এদের গ্রহণ করতে রাজি এমন কোনো দেশ খুঁজে বের করা।”
ইসরাইলি দৈনিক মারিভ–এ ফাঁস হওয়া ট্রান্সক্রিপ্ট অনুসারে, বৈঠকে কনেসেট সদস্য লিমোর সোন হার-মেলেখ বলেন, “আমেরিকার ইহুদিদের গাজায় এনে বসতি স্থাপন করান। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে।”
তবে নেতানিয়াহু আরও জানান, “আমি জানি কিছু মানুষ হতাশ হবেন, তবে এখনই গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বসতি স্থাপন নিয়ে আমরা আলোচনা করছি না।”
নেতানিয়াহু দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র “গাজা উপত্যকার প্রশাসন দখলের পরিকল্পনায় আগ্রহী” রয়েছে। তবে টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাব ঘোষণার পর আরব মিত্রদের তীব্র বিরোধিতায় যুক্তরাষ্ট্র (ট্রাম্প প্রশাসন) এ বিষয়ে আর খুব বেশি অগ্রগতি করেনি।
চলমান সামরিক অভিযানে গাজার প্রায় সব এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইতোমধ্যেই প্রায় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি বারবার গৃহহীন হয়েছেন এবং চরম মানবিক সংকটের মুখে পড়েছেন।
মার্চের শুরু থেকে গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল। খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও ওষুধসহ সকল প্রকার মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় অবরুদ্ধ জনগণের দুর্ভোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।