ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরাইলের বিরুদ্ধে শুনানি শুরুর দিনেই আরও ৭১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরাইলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২,৩১৪ জনে।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫৩ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১৭,৭৯২ জনে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘অনেক হতাহত এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছেন, কারণ উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।”

আনাদোলু জানিয়েছে, ইসরাইল গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে টানা আগ্রাসন চালানোর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়।

তবে গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় তাদের ধ্বংসাত্মক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২,২২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫,৭০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

এদিকে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়াও গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরাইল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।

এদিকে সোমবার জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এক সপ্তাহের শুনানি শুরু করেছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।

এ সময় ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তা আম্মার হিজাজি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ইসরাইল ‘যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সাহায্য আটকে দিচ্ছে।

শুনানিতে তিনি বিচারকদের বলেন, ‘এখানে ক্ষুধা চরম আকার ধারণ করেছে। মানবিক সাহায্য যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে’।

আইসিজে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর ওপর ইসরাইলের বাধ্যবাধকতা নিয়ে এক সপ্তাহের শুনানি করছে। যার মধ্যে সাহায্য সংস্থাগুলোও রয়েছে।

এই সময়ে একাধিক দেশ ও সংস্থা ১৫ জন বিচারকের একটি প্যানেলের সামনে দীর্ঘ শুনানিতে অংশ নেবে।

যদিও অপরাধী ইসরাইল এই শুনানিতে অংশ নিচ্ছে না। তবে বুধবার তার মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ নেবে।

এদিকে জাতিসংঘ আইসিজেকে এই মামলায় ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা ও গুরুত্বের সঙ্গে’ রায় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। তবে রায় পেতে সম্ভবত কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।

শুনানিতে বিচারকরা জাতিসংঘ এবং এর সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা তৃতীয় পক্ষের রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ইসরাইলের আইনি বাধ্যবাধকতা বিবেচনা করবেন। যাতে ‘ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি সহায়তার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং সহজতর করা যায়।

জনপ্রিয়

ইসরাইলের বিরুদ্ধে শুনানি শুরুর দিনেই আরও ৭১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে
গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরাইলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২,৩১৪ জনে।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫৩ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১৭,৭৯২ জনে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘অনেক হতাহত এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছেন, কারণ উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।”

আনাদোলু জানিয়েছে, ইসরাইল গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে টানা আগ্রাসন চালানোর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়।

তবে গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় তাদের ধ্বংসাত্মক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২,২২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫,৭০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

এদিকে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়াও গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরাইল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।

এদিকে সোমবার জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এক সপ্তাহের শুনানি শুরু করেছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।

এ সময় ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তা আম্মার হিজাজি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ইসরাইল ‘যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সাহায্য আটকে দিচ্ছে।

শুনানিতে তিনি বিচারকদের বলেন, ‘এখানে ক্ষুধা চরম আকার ধারণ করেছে। মানবিক সাহায্য যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে’।

আইসিজে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর ওপর ইসরাইলের বাধ্যবাধকতা নিয়ে এক সপ্তাহের শুনানি করছে। যার মধ্যে সাহায্য সংস্থাগুলোও রয়েছে।

এই সময়ে একাধিক দেশ ও সংস্থা ১৫ জন বিচারকের একটি প্যানেলের সামনে দীর্ঘ শুনানিতে অংশ নেবে।

যদিও অপরাধী ইসরাইল এই শুনানিতে অংশ নিচ্ছে না। তবে বুধবার তার মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ নেবে।

এদিকে জাতিসংঘ আইসিজেকে এই মামলায় ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা ও গুরুত্বের সঙ্গে’ রায় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। তবে রায় পেতে সম্ভবত কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।

শুনানিতে বিচারকরা জাতিসংঘ এবং এর সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা তৃতীয় পক্ষের রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ইসরাইলের আইনি বাধ্যবাধকতা বিবেচনা করবেন। যাতে ‘ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি সহায়তার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং সহজতর করা যায়।