ঢাকা , শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন শুল্কের চাপ বৈশ্বিক বাণিজ্যে বৈষম্য বাড়াবে: আংকটাডের সতর্কতা সবচেয়ে ঝুঁকিতে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহ

বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন করে আমদানি শুল্কের ঢেউ উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আংকটাড) সম্প্রতি প্রকাশিত ‘Sparing the Vulnerable: The Cost of New Tariff Burdens’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সতর্ক বার্তা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আমদানি শুল্কের কারণে বাণিজ্য খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি), ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র ও স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর। এসব দেশের বৈশ্বিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণ খুবই সীমিত হলেও, তারাই সবচেয়ে বেশি শুল্ক বৃদ্ধির মুখোমুখি।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি পরিবর্তন: বড় ধাক্কা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২২টি উন্নয়নশীল দেশের আমদানির ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশের ওপরে বাড়াতে যাচ্ছে। এর মধ্যে সাতটি এলডিসিও রয়েছে, যাদের রপ্তানি আগে মার্কিন বাজারে অগ্রাধিকারভিত্তিক সুবিধা পেত। ইতিমধ্যে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ হারে সর্বজনীন শুল্ক আরোপ করেছে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ শুল্কহার ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। যদিও কয়েকটি দেশের জন্য এ হার ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, তবুও এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের কৃষিপণ্য ও তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

রপ্তানি ব্যয় বাড়ছে, কমছে প্রতিযোগিতা
নতুন শুল্কের ফলে মার্কিন বাজারে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়বে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য। যদিও এসব দেশের অংশগ্রহণ মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতির মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ, তবু শুল্ক বৃদ্ধি রপ্তানি ব্যয় অনেকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে পোশাক ও কৃষিপণ্য খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বৈষম্য বাড়বে, উন্নয়ন ব্যাহত হবে
আংকটাডের মতে, এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার, ট্যারিফ রিলিফ নীতিমালা প্রণয়ন এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সহজ শর্তে বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন বৈষম্য তৈরি হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক উন্নয়নকে ব্যাহত করতে পারে।

বিশেষ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও হুমকির মুখে অগ্রগতি
যদিও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক চুক্তিতে স্বল্পোন্নত ও ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির জন্য বিশেষ সুবিধা থাকার কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে নতুন শুল্ক কাঠামো তাদের সীমিত অগ্রগতিকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

জনপ্রিয়

নতুন শুল্কের চাপ বৈশ্বিক বাণিজ্যে বৈষম্য বাড়াবে: আংকটাডের সতর্কতা সবচেয়ে ঝুঁকিতে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহ

প্রকাশিত: ১৭ ঘন্টা আগে

বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন করে আমদানি শুল্কের ঢেউ উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আংকটাড) সম্প্রতি প্রকাশিত ‘Sparing the Vulnerable: The Cost of New Tariff Burdens’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সতর্ক বার্তা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আমদানি শুল্কের কারণে বাণিজ্য খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি), ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র ও স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর। এসব দেশের বৈশ্বিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণ খুবই সীমিত হলেও, তারাই সবচেয়ে বেশি শুল্ক বৃদ্ধির মুখোমুখি।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি পরিবর্তন: বড় ধাক্কা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২২টি উন্নয়নশীল দেশের আমদানির ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশের ওপরে বাড়াতে যাচ্ছে। এর মধ্যে সাতটি এলডিসিও রয়েছে, যাদের রপ্তানি আগে মার্কিন বাজারে অগ্রাধিকারভিত্তিক সুবিধা পেত। ইতিমধ্যে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ হারে সর্বজনীন শুল্ক আরোপ করেছে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ শুল্কহার ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। যদিও কয়েকটি দেশের জন্য এ হার ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, তবুও এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের কৃষিপণ্য ও তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

রপ্তানি ব্যয় বাড়ছে, কমছে প্রতিযোগিতা
নতুন শুল্কের ফলে মার্কিন বাজারে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়বে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য। যদিও এসব দেশের অংশগ্রহণ মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতির মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ, তবু শুল্ক বৃদ্ধি রপ্তানি ব্যয় অনেকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে পোশাক ও কৃষিপণ্য খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বৈষম্য বাড়বে, উন্নয়ন ব্যাহত হবে
আংকটাডের মতে, এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার, ট্যারিফ রিলিফ নীতিমালা প্রণয়ন এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সহজ শর্তে বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন বৈষম্য তৈরি হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক উন্নয়নকে ব্যাহত করতে পারে।

বিশেষ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও হুমকির মুখে অগ্রগতি
যদিও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক চুক্তিতে স্বল্পোন্নত ও ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির জন্য বিশেষ সুবিধা থাকার কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে নতুন শুল্ক কাঠামো তাদের সীমিত অগ্রগতিকেও হুমকির মুখে ফেলছে।