চট্টগ্রামে ভোজ্যতেলের সংকট আরও বেড়ে গেছে, এবং প্রশাসন নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও বাজারে স্থিতিশীলতা আসেনি। স্থানীয় প্রশাসন বারবার আমদানিকারক এবং আড়তদারদের সঙ্গে বৈঠক করলেও পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়নি। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ভোজ্যতেলের সরবরাহ সমস্যা সমাধান না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এবং সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক সভায় জেলা প্রশাসক জানান, “আমি দেখতে চাই, রাষ্ট্রের শক্তি বেশি না ব্যবসায়ীদের শক্তি। তেলের সাপ্লাই যদি পর্যাপ্ত না হয়, তবে গুদাম পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এবার শুধু জরিমানা করব না, কারাদণ্ডও দেব।”
তবে, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলা প্রশাসনের হুঁশিয়ারি কার্যকর হয়নি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ অপ্রতুল। এমনকি সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে ২৫-৩০ টাকা বেশি দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে, যা সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি।
চট্টগ্রামের খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, ডিলাররা তাদের নিয়মিত ক্রেতাদের সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। ফলে, বাজারে তেলের সংকট বাড়ছে এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রশাসন শুধু খুচরা দোকানে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। তেলের গুদামে অভিযান চালালে হয়তো সংকটের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটিত হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে গত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টন অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে। তবুও, বাজারে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, এবং সরবরাহ চাহিদার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে তেলের সংকট মেটাতে শুধু অভিযান চালানো যথেষ্ট নয়, বরং মিলারদের উৎপাদন ও সরবরাহের তথ্য সংগ্রহ করা দরকার। তেলের আসল সংকট মিলার এবং ডিলারদের গুদাম পর্যায়ে থাকতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে, চট্টগ্রামে ভোজ্যতেল সংকটের অবসান না হলে বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধি এবং জনভোগান্তির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।