মার্কিন ফেডারেল আপিল আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপ করা শুল্ক স্থগিতের আদেশ স্থগিত করেছে। এর ফলে আপাতত আবারও কার্যকর হলো বিতর্কিত সেই শুল্ক ব্যবস্থা। শুক্রবার (৩০ মে) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট কোর্ট অব আপিলস বৃহস্পতিবার এক জরুরি আদেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের পূর্বের রায় কার্যকর হওয়া থেকে সাময়িক বিরতি দেয়। যদিও আদালত এই আদেশে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি, তবে মামলার বাদী পক্ষকে আগামী ৫ জুনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, শুল্ক বাতিল হলে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। আপিল আদালত প্রাথমিকভাবে সেই যুক্তিকে মেনেই শুল্ক চালু রাখার নির্দেশ দেয়। হোয়াইট হাউসও এই আদেশকে স্বাগত জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, “আমরা যদি কোনো শুল্ক মামলায় হেরে যাই, তাহলেও অন্য পথ খুঁজে বের করব।”
এর আগে গত বুধবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত রায় দিয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট, ১৯৭৭’ (আইইইপিএ) আইনের অপব্যবহার করেছে। আদালত জানায়, ট্রাম্প যে ‘বিশ্বব্যাপী ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক’ আরোপ করেছিলেন, তা ওই আইনের ক্ষমতা সীমার বাইরে গেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন এই আইনের আওতায় চীন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে। তার যুক্তি ছিল, এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল পাচারে ভূমিকা রাখছে। তবে বিচারকদের মতে, এই অভিযোগের সঙ্গে ট্রাম্পের শুল্ক সিদ্ধান্তের সরাসরি সংযোগ নেই।
উল্লেখ্য, ২০২5 সালের ২ এপ্রিল, ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে বিশ্ববাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়। পরে চীন বাদে অন্য দেশগুলোর ওপর ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করেন তিনি এবং এই সময়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালায় ট্রাম্প প্রশাসন।
বিশ্লেষকদের মতে, শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের কৌশল আবারও বিশ্ববাণিজ্যে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। একইসঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি অনিশ্চিতই থেকে যাচ্ছে।