ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
শাহবাগীদের বিচার দাবি হেফাজতের, জুলাইয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান সুস্পষ্ট লঘুচাপ ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার শঙ্কা, ছয় বিভাগে অতিভারি বর্ষণের পূর্বাভাস হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তা চায় সরকার কুকি-চিনের ইউনিফর্ম সন্দেহে চট্টগ্রামে গার্মেন্টস থেকে ফের ১৫ হাজার পোশাক জব্দ বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার সংখ্যা বেড়ে ২৪৪ ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাঁচদিন পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ থাকবে নাম বদলানো হলো ১৯৫টি স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া স্থাপনার বোরো সংগ্রহ সফল হবে বলে আশা খাদ্য উপদেষ্টার ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

আমরা কোনো শর্ত ছাড়াই ক্ষমা চাই, আমাদের ক্ষমা করে দিন : জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দলীয় বা ব্যক্তিগতভাবে জামায়াতের নেতাকর্মীদের দ্বারা কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন, তবে তিনি তাদের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা হলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “মানুষ হিসেবে আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নই। দল হিসেবে আমরা কখনও দাবি করিনি যে আমরা ভুল করি না। যাদের কেউ জামায়াতে ইসলামী বা আমাদের কোনো কর্মীর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের কাছে আমরা কোনো শর্ত ছাড়াই ক্ষমা চাই। আমাদের ক্ষমা করে দিন।”

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে দলীয় অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়েও কথা বলেন জামায়াত আমির।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এমনকি ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নেওয়ার পরেও শহীদ পরিবার, আহত ও পঙ্গু ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা আমাদের সকল দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। আমাদের আচরণ কিংবা কর্মকাণ্ডে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আজও জাতির বহু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়ে গেছে। সব রাজনৈতিক দল ও দেশপ্রেমিক অংশীজনদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যদি কখনও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাই, ইনশাআল্লাহ প্রতিশোধ ও বৈষম্যের রাজনীতির অবসান ঘটাব।”

তিনি একটি দুর্নীতিমুক্ত, দুঃশাসনমুক্ত, অপরাধমুক্ত এবং মানবিক সমাজ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা কল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাহচর্য, সমর্থন, ভালোবাসা ও দোয়া কামনা করি।”

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুর রহমান অতীত সরকারের সময় যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে “ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা” বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাসপ্রাপ্তির রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে— সত্যকে চেপে রাখা যায় না। মেঘের আড়াল ভেদ করে একদিন সত্যই আলো নিয়ে আসে। আজকের রায়ে সেই সত্য প্রকাশ পেয়েছে।”

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। সেই প্রক্রিয়ায় জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজহারের রিভিউ আবেদনের পর পুনরায় আপিল শুনে তাকে বেকসুর খালাস দেয়।

এই রায়কে কেন্দ্র করেই জামায়াতের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হলো, যেখানে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য একটি সহনশীল, সমতা ও ন্যায়ের সমাজ গঠনের অঙ্গীকার উচ্চারিত হয়।

জনপ্রিয়

শাহবাগীদের বিচার দাবি হেফাজতের, জুলাইয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান

আমরা কোনো শর্ত ছাড়াই ক্ষমা চাই, আমাদের ক্ষমা করে দিন : জামায়াত আমির

প্রকাশিত: ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দলীয় বা ব্যক্তিগতভাবে জামায়াতের নেতাকর্মীদের দ্বারা কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন, তবে তিনি তাদের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা হলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “মানুষ হিসেবে আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নই। দল হিসেবে আমরা কখনও দাবি করিনি যে আমরা ভুল করি না। যাদের কেউ জামায়াতে ইসলামী বা আমাদের কোনো কর্মীর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের কাছে আমরা কোনো শর্ত ছাড়াই ক্ষমা চাই। আমাদের ক্ষমা করে দিন।”

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে দলীয় অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়েও কথা বলেন জামায়াত আমির।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এমনকি ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নেওয়ার পরেও শহীদ পরিবার, আহত ও পঙ্গু ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা আমাদের সকল দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। আমাদের আচরণ কিংবা কর্মকাণ্ডে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আজও জাতির বহু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়ে গেছে। সব রাজনৈতিক দল ও দেশপ্রেমিক অংশীজনদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যদি কখনও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাই, ইনশাআল্লাহ প্রতিশোধ ও বৈষম্যের রাজনীতির অবসান ঘটাব।”

তিনি একটি দুর্নীতিমুক্ত, দুঃশাসনমুক্ত, অপরাধমুক্ত এবং মানবিক সমাজ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা কল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাহচর্য, সমর্থন, ভালোবাসা ও দোয়া কামনা করি।”

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুর রহমান অতীত সরকারের সময় যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে “ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা” বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাসপ্রাপ্তির রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে— সত্যকে চেপে রাখা যায় না। মেঘের আড়াল ভেদ করে একদিন সত্যই আলো নিয়ে আসে। আজকের রায়ে সেই সত্য প্রকাশ পেয়েছে।”

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। সেই প্রক্রিয়ায় জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজহারের রিভিউ আবেদনের পর পুনরায় আপিল শুনে তাকে বেকসুর খালাস দেয়।

এই রায়কে কেন্দ্র করেই জামায়াতের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হলো, যেখানে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য একটি সহনশীল, সমতা ও ন্যায়ের সমাজ গঠনের অঙ্গীকার উচ্চারিত হয়।