নারী সংস্কার কমিশনের কয়েকটি বিতর্কিত সুপারিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এ সুপারিশগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি, ফলে বিষয়টি ‘প্রি-ম্যাচিউড’। তবে সরকার এগুলো বাস্তবায়ন করলে, রিটকারী চাইলে ভবিষ্যতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রওশন আলী। আর কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।
গত ১৯ মে নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে করা রিটের শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেছিলেন আদালত।
রিটে বলা হয়, কমিশনের ৩১৮ পৃষ্ঠার ‘উইমেন রিফর্ম কমিশন রিপোর্ট, ২০২৫’-এর কয়েকটি অধ্যায়ে যে সুপারিশগুলো রয়েছে, সেগুলো ইসলামী শরীয়ত, সংবিধান এবং দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই পরিপ্রেক্ষিতে রিটকারী এসব সুপারিশ পর্যালোচনার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশনার আবেদন জানান।
রিপোর্টের ৩, ৪, ৬, ১০, ১১ ও ১২ নম্বর অধ্যায় নিয়ে আপত্তি জানানো হয় রিটে।
রিটে উল্লেখ করা হয়, অধ্যায় ১১-তে পুরুষ ও নারীর জন্য সমান উত্তরাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা কোরআনের সুরা নিসা (৪:১১)-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এ ছাড়া, প্রতিবেদনে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব এসেছে, যা ইসলামী শরীয়তের অনুমোদিত বিধান। রিটে বলা হয়, এটি সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে দেওয়া ধর্মচর্চার অধিকার লঙ্ঘন করে।
‘My Body, My Choice’ স্লোগানকে অন্ধভাবে সমর্থন করা হয়েছে বলেও রিটে দাবি করা হয়। রিটকারীর মতে, এতে শরীয়তের নৈতিক সীমা উপেক্ষা করা হয়েছে।
রিপোর্টে যৌনকর্মকে একটি বৈধ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে, যা ইসলামি মূল্যবোধ ও সংবিধানের ২(ক) ও ২৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।
এ ছাড়া, লিঙ্গ পরিচয় ও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের বিষয়ে যে ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে, তা শরীয়তবিরোধী এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিযোগ করা হয়।
রিটে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং উইমেন রিফর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।