ঢাকা , রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুয়া অনুমোদনে চলছে মিনি মেডিকেল কলেজ

যশোরের মণিরামপুরের পর এবার কেশবপুরে গড়ে উঠেছে ‘সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’ নামে একটি ভুয়া মিনি মেডিকেল কলেজ। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর (স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ) থেকে অনুমোদন পাওয়ার দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি। যা আদৌ সত্য নয়। খুলনার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে অনুমোদন নিয়ে পরিচালনা করছে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম। শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে বোকা বানাতে লিফলেট ও সাইনবোর্ডে লিখে রেখেছেন বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত। রেজিস্ট্রেশন নম্বর কেএইসসি-২৫৩৯ পরিচালিত।

সূত্র জানায়, কেশবপুর মাইকেল রোড পশুহাটের বিপরীতে মিলন হোসেন নামে এক ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন ‘সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আর নিজে সেজে বসেছেন ওই মিনি মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান। তৈরি করেছেন শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট। যে চক্রের কাজ দেশব্যাপী শাখা অফিস দিয়ে প্রতি মাসে অর্থ আদায় করা।

এ প্রতিষ্ঠান ক্লাস পরিচালনা করছে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি, ডিপ্লোমা ইন ক্লিনিক্যাল নার্স, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট, ডিপ্লোমা ইন মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ্ কেয়ার, ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল কেয়ার, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ল্যাবরোটরি টেকনোলজিস্ট, পল্লী চিকিৎসক, লোকাল ইউনানী মেডিসিন প্রাকটিশনার, ফ্রিল্যান্সিং, ফার্মেসিসহ একাধিক বিষয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বেসরকরি পর্যায়ে যশোরে একমাত্র মেসবাহ-উর রহমান (ম্যাটস্) ও সেন্ট মেডিকেল ছাড়া উপরে উল্লেখিত কোর্স কেউ করাতে পারবে না। একমাত্র এই দুটি প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদিত। আর বাদবাকি যারা এসব কোর্স পরিচালনা করছে তারা স্রেফ প্রতারক।

অপর একটি সূত্র বলছে, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সামাজিক ও ফাউন্ডেশন থেকে অনুমতি নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন চলে আসলেও স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। দুই থেকে তিন বছর নষ্ট করে শিক্ষার্থীরা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে সার্টিফিকেট অর্জন করে চাকরির খোঁজ করতে গেলে বুঝতে পারছেন যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠান ও সার্টিফিকেট ভুঁইফোড়। সকল ডিপ্লোমা ও ইউনানী কোর্সের জন্য ম্যাটস্ ও হোমিওপ্যাথি কোর্সের জন্য হোমিওপ্যাথি বোর্ড আছে। তাহলে, সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট কিভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষার্থী ভর্তি ও শাখা অফিস খুলে অর্থ আত্মসাৎ করায় এ প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য বলেও মনে বলেন স্থানীয়রা।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়দানকারী মিলন হোসেন জানান, তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র আছে। একইসাথে তিনি ট্রেড লাইসেন্স করে ব্যবসা করছেন। তবে, তার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে অস্বীকার করেন।

যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অনুমতি দেয়নি। এসব প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।

জনপ্রিয়

ভুয়া অনুমোদনে চলছে মিনি মেডিকেল কলেজ

প্রকাশিত: এক ঘন্টা আগে

যশোরের মণিরামপুরের পর এবার কেশবপুরে গড়ে উঠেছে ‘সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’ নামে একটি ভুয়া মিনি মেডিকেল কলেজ। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর (স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ) থেকে অনুমোদন পাওয়ার দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি। যা আদৌ সত্য নয়। খুলনার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে অনুমোদন নিয়ে পরিচালনা করছে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম। শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে বোকা বানাতে লিফলেট ও সাইনবোর্ডে লিখে রেখেছেন বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত। রেজিস্ট্রেশন নম্বর কেএইসসি-২৫৩৯ পরিচালিত।

সূত্র জানায়, কেশবপুর মাইকেল রোড পশুহাটের বিপরীতে মিলন হোসেন নামে এক ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন ‘সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আর নিজে সেজে বসেছেন ওই মিনি মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান। তৈরি করেছেন শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট। যে চক্রের কাজ দেশব্যাপী শাখা অফিস দিয়ে প্রতি মাসে অর্থ আদায় করা।

এ প্রতিষ্ঠান ক্লাস পরিচালনা করছে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি, ডিপ্লোমা ইন ক্লিনিক্যাল নার্স, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট, ডিপ্লোমা ইন মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ্ কেয়ার, ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল কেয়ার, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ল্যাবরোটরি টেকনোলজিস্ট, পল্লী চিকিৎসক, লোকাল ইউনানী মেডিসিন প্রাকটিশনার, ফ্রিল্যান্সিং, ফার্মেসিসহ একাধিক বিষয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বেসরকরি পর্যায়ে যশোরে একমাত্র মেসবাহ-উর রহমান (ম্যাটস্) ও সেন্ট মেডিকেল ছাড়া উপরে উল্লেখিত কোর্স কেউ করাতে পারবে না। একমাত্র এই দুটি প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদিত। আর বাদবাকি যারা এসব কোর্স পরিচালনা করছে তারা স্রেফ প্রতারক।

অপর একটি সূত্র বলছে, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সামাজিক ও ফাউন্ডেশন থেকে অনুমতি নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন চলে আসলেও স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। দুই থেকে তিন বছর নষ্ট করে শিক্ষার্থীরা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে সার্টিফিকেট অর্জন করে চাকরির খোঁজ করতে গেলে বুঝতে পারছেন যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠান ও সার্টিফিকেট ভুঁইফোড়। সকল ডিপ্লোমা ও ইউনানী কোর্সের জন্য ম্যাটস্ ও হোমিওপ্যাথি কোর্সের জন্য হোমিওপ্যাথি বোর্ড আছে। তাহলে, সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট কিভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষার্থী ভর্তি ও শাখা অফিস খুলে অর্থ আত্মসাৎ করায় এ প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য বলেও মনে বলেন স্থানীয়রা।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়দানকারী মিলন হোসেন জানান, তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র আছে। একইসাথে তিনি ট্রেড লাইসেন্স করে ব্যবসা করছেন। তবে, তার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে অস্বীকার করেন।

যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অনুমতি দেয়নি। এসব প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।