ঢাকা , বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
আগামী পাঁচ দিন ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রা থাকবে প্রায় অপরিবর্তিত কারাগারে নববর্ষ, তবু হাস্যোজ্জ্বল শাজাহান খান বললেন: ‘বাইরের চেয়ে ভিতরেই ভালো আছি’ দেশ-বিদেশে এস আলম গ্রুপের আরও জমি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান গাইবান্ধায় পরিত্যক্ত কুপে মিলল অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরের অর্ধগলিত লাশ নেত্রকোনায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, মুদি দোকানি গ্রেফতার নোয়াখালীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২ আউটসোর্সিং সেবা কর্মীদের জন্য ‘সেবা গ্রহণ নীতিমালা-২০২৫’ জারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির আবেদন শুরু সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন: পাঁচটিতে বাদ পড়েছে নজরুল ইসলাম বাবুর নাম ‘প্রো-বাংলাদেশ’ নীতিই অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক অগ্রাধিকার: প্রেস সচিব

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে বেড়েছে লবণাক্ততা, কমেছে উৎপাদন

শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়ছে। ফলে জোয়ারের সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্পগুলো। এতে কমেছে ওয়াসার পানি উৎপাদন। লবণাক্ততার কারণে এখন প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা হালদা ও কর্ণফুলী নদী থেকে তাদের একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে পানি উৎপাদন করে। বর্তমানে হালদার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা যাচ্ছে। অথচ সহনীয় পর্যায় ২৫০ মিলিগ্রাম।

 

চট্টগ্রাম ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানিতে লবণের মাত্রা পরিলক্ষিত হয়। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রায় ইউনিট বন্ধ করে রাখার ফলে কাপ্তাই লেক থেকে হালদায় পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় জোয়ারের সময় কর্ণফুলীর লবণাক্ত পানি হালদায় প্রবেশের মাত্রা বেড়ে যায়। এখন মার্চ মাসে এসে লবণাক্ততা আরও অতিমাত্রায় পৌঁছেছে। এই কারণে জোয়ারের সময় ওয়াসার প্লান্টগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যার ফলে প্রতিদিনের উৎপাদন কমেছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত হালদায় লবণাক্ততার পরিমাণ কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ওয়াসার প্রকৌশলীরা।

 

এদিকে পবিত্র রমজান মাস জুড়ে নগরীতে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ওয়াসার পক্ষ থেকে বেশ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল আমিন আজাদীকে বলেন, রমজান মাস জুড়ে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাতে আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের ৪টি মড–এ ৪টি কন্ট্রোল রুম চালু রয়েছে। মড–১ আগ্রাবাদ, মড–২ জুবলী রোড, মড–৩ মেহেদীবাগ, মড–৪ কালুরঘাট। এছাড়াও ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। পানি সরবরাহ যেন সার্বক্ষণিক চালু থাকে। এছাড়াও পানির ভাউচার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে পানির সংকট দেখা দেবে সেখানে ভাউচার করে পানি সরবরাহ দেয়া হবে। শুষ্ক মৌসুমে হালদার পানি কমে যাওয়ায় জোয়ারের সময় সমুদ্রের লবণাক্ত পানি হালদায় ঢুকে যায়। তখন উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। যখন লবণের পরিমাণ কম থাকে তখন আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে দিই। গত রোববার হালদার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩২০ মিলিগ্রাম লবণাক্ততা পাওয়া গেছে। সহনীয় পর্যায় ২০০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম বলে জানান তিনি।

 

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল আমিন বলেন, মোহরা পানি শোধনাগারে স্বাভাবিক সময়ে ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন হয়। এখন জোয়ারের সময় লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ওই সময় উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায় না। যার কারণে উৎপাদন একটু কমেছে। এখন ৬ থেকে ৭ কোটি লিটার আবার কখনো ৮ কোটি লিটারও উৎপাদন হচ্ছে। সবমিলে এখন দৈনিক উৎপাদন ৪৫ কোটি লিটার। তবে রমজানে নগরীতে এখনো পর্যন্ত পানির তেমন কোনো সংকট নেই।

 

চট্টগ্রাম ওয়াসার অপর এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌলশী জানান, রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প–১ এবং প্রকল্প–২ থেকে প্রতিদিন ১৪ কোটি করে ২৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে এ দুটি প্রকল্প থেকে উৎপাদন হচ্ছে ২৬ কোটি লিটার পানি। একইভাবে মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প এবং মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৯ কোটি লিটার করে ১৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে তা কমে ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

জনপ্রিয়

আগামী পাঁচ দিন ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রা থাকবে প্রায় অপরিবর্তিত

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে বেড়েছে লবণাক্ততা, কমেছে উৎপাদন

প্রকাশিত: ০৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়ছে। ফলে জোয়ারের সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্পগুলো। এতে কমেছে ওয়াসার পানি উৎপাদন। লবণাক্ততার কারণে এখন প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা হালদা ও কর্ণফুলী নদী থেকে তাদের একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে পানি উৎপাদন করে। বর্তমানে হালদার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা যাচ্ছে। অথচ সহনীয় পর্যায় ২৫০ মিলিগ্রাম।

 

চট্টগ্রাম ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানিতে লবণের মাত্রা পরিলক্ষিত হয়। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রায় ইউনিট বন্ধ করে রাখার ফলে কাপ্তাই লেক থেকে হালদায় পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় জোয়ারের সময় কর্ণফুলীর লবণাক্ত পানি হালদায় প্রবেশের মাত্রা বেড়ে যায়। এখন মার্চ মাসে এসে লবণাক্ততা আরও অতিমাত্রায় পৌঁছেছে। এই কারণে জোয়ারের সময় ওয়াসার প্লান্টগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যার ফলে প্রতিদিনের উৎপাদন কমেছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত হালদায় লবণাক্ততার পরিমাণ কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ওয়াসার প্রকৌশলীরা।

 

এদিকে পবিত্র রমজান মাস জুড়ে নগরীতে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ওয়াসার পক্ষ থেকে বেশ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল আমিন আজাদীকে বলেন, রমজান মাস জুড়ে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাতে আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের ৪টি মড–এ ৪টি কন্ট্রোল রুম চালু রয়েছে। মড–১ আগ্রাবাদ, মড–২ জুবলী রোড, মড–৩ মেহেদীবাগ, মড–৪ কালুরঘাট। এছাড়াও ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। পানি সরবরাহ যেন সার্বক্ষণিক চালু থাকে। এছাড়াও পানির ভাউচার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে পানির সংকট দেখা দেবে সেখানে ভাউচার করে পানি সরবরাহ দেয়া হবে। শুষ্ক মৌসুমে হালদার পানি কমে যাওয়ায় জোয়ারের সময় সমুদ্রের লবণাক্ত পানি হালদায় ঢুকে যায়। তখন উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। যখন লবণের পরিমাণ কম থাকে তখন আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে দিই। গত রোববার হালদার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩২০ মিলিগ্রাম লবণাক্ততা পাওয়া গেছে। সহনীয় পর্যায় ২০০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম বলে জানান তিনি।

 

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল আমিন বলেন, মোহরা পানি শোধনাগারে স্বাভাবিক সময়ে ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন হয়। এখন জোয়ারের সময় লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ওই সময় উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায় না। যার কারণে উৎপাদন একটু কমেছে। এখন ৬ থেকে ৭ কোটি লিটার আবার কখনো ৮ কোটি লিটারও উৎপাদন হচ্ছে। সবমিলে এখন দৈনিক উৎপাদন ৪৫ কোটি লিটার। তবে রমজানে নগরীতে এখনো পর্যন্ত পানির তেমন কোনো সংকট নেই।

 

চট্টগ্রাম ওয়াসার অপর এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌলশী জানান, রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প–১ এবং প্রকল্প–২ থেকে প্রতিদিন ১৪ কোটি করে ২৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে এ দুটি প্রকল্প থেকে উৎপাদন হচ্ছে ২৬ কোটি লিটার পানি। একইভাবে মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প এবং মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৯ কোটি লিটার করে ১৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে তা কমে ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।