ঢাকা , শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ফেনী সীমান্তে নারী-শিশুসহ ১১ বাংলাদেশিকে পুশইন করল বিএসএফ প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিধান পরিবর্তনে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য ৫ সচিব ও ১ গ্রেড-১ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত সেনাবাহিনী স্বায়ত্তশাসন পেতে যাচ্ছে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার সীমান্তের ওপারে ঝুলন্ত মরদেহ, শনাক্ত যুবক জাকারিয়া ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: আইন মন্ত্রণালয় অস্ত্রসহই দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ, মাদককারবারিরা সুযোগ পাচ্ছে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া নজরদারি

নতুন নোটে বিড়ম্বনা, নিচ্ছে না এটিএম ও মেট্রো রেলের বুথ

চলতি জুন মাসে বাজারে এসেছে তিন ধরনের নতুন নোট। এগুলোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীক। নতুন নোট সংগ্রহে মানুষের আগ্রহ ব্যাপক হলেও, বাস্তব জীবনে এর ব্যবহার নিয়ে পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়।

অনেকেই অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও ও পোস্টে দেখা যাচ্ছে, নতুন এক হাজার টাকার নোট দোকানদার কিংবা মেশিনে জমা দেওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ একাধিক দোকানে গিয়েও নোটটি বৈধ বলে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

বিশেষত এটিএম ও সিআরএম বুথে এবং মেট্রো রেলের টিকিটিং সিস্টেমে এই নতুন নোট গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন গ্রাহক এটিএম মেশিনে নতুন এক হাজার টাকার নোট জমা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সেটি গ্রহণ করা হয়নি।

এ বিষয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) শাহ আলম পাটোয়ারী বলেন, ‘নতুন এক হাজার টাকার নোট গ্রহণ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ এটিএম বুথের সফটওয়্যার সিস্টেমে নতুন টাকাটি এখনো সংযুক্ত করা হয়নি। এতে কয়েক ধাপে বিশেষ সিকিউরিটি কনফিগারেশন সম্পন্ন করতে হয়। এরই মধ্যে এই আপডেটের কাজ শুরু হয়েছে এবং খুব শিগগিরই এটি সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সমস্যার এখনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া না হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আপডেট ও কনফিগারেশন কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এর আগে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও বুথ ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন করা হলে এই বিড়ম্বনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গত ঈদুল আজহার ছুটিতে এটিএম বুথে টাকা না পেয়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রাহকদের। অন্যদিকে নতুন টাকা জমা দিতে পারেননি অনেকে। কিন্তু এটিএম বুথের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা টাকা জমা ও তোলার সুযো করেগ পাওয়ার কথা। ঈদের ছুটিতে সেই এটিএম বুথ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুথ থেকে বুথে ঘুরেও নগদ টাকা মিলছে না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, ছয়-সাতটি এটিএম বুথ ঘুরে যা নগদ মিলছে, তাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গ্রাহকদের নির্বিঘ্নে অর্থ লেনদেনের সুযোগ দিতে দেশের ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা সরবরাহের নির্দেশ ঈদের আগেই দেওয়া হয়েছে। এটিএম বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা মজুদ যাতে থাকে, তার সব ধরনের ব্যবস্থা ঈদের আগেই করে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ না মানলে কঠোর হবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

তিনি বলেন, ‘ছুটিতে যেসব ব্যাংক তাদের বুথগুলোয় পর্যাপ্ত টাকা মজুদ রাখেনি এবং টাকা শেষের পর সঙ্গে সঙ্গে রিফিলের ব্যবস্থা করছে না-এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এটিএম বুথে গ্রাহকদের হয়রানি কোনোভাবেই মেনে নেবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, সারা দেশে এটিএম বুথ রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৬টি এবং ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে সাত হাজার ১২টি।

ঈদের ছুটিতে অনেক গ্রাহক এসব বুথ থেকে টাকা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। যারা নতুন নোট নিয়ে এসেছে তারাও সমস্যায় পড়েছেন, কারণ প্রযুক্তিগত কারণে এসব নোট এখনো অটোমেটেড সিস্টেমে স্বীকৃতি পায়নি।

বিশ্লেষকদের মত- এই সমস্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত জনসচেতনতার অভাব এবং সময়মতো সফটওয়্যার আপডেট না করা। তারা মনে করছেন, আগেভাগে প্রস্তুতি ও প্রচারণা চালালে এই বিড়ম্বনা এড়ানো যেত।

জনপ্রিয়

ফেনী সীমান্তে নারী-শিশুসহ ১১ বাংলাদেশিকে পুশইন করল বিএসএফ

নতুন নোটে বিড়ম্বনা, নিচ্ছে না এটিএম ও মেট্রো রেলের বুথ

প্রকাশিত: ১১ ঘন্টা আগে

চলতি জুন মাসে বাজারে এসেছে তিন ধরনের নতুন নোট। এগুলোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীক। নতুন নোট সংগ্রহে মানুষের আগ্রহ ব্যাপক হলেও, বাস্তব জীবনে এর ব্যবহার নিয়ে পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়।

অনেকেই অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও ও পোস্টে দেখা যাচ্ছে, নতুন এক হাজার টাকার নোট দোকানদার কিংবা মেশিনে জমা দেওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ একাধিক দোকানে গিয়েও নোটটি বৈধ বলে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

বিশেষত এটিএম ও সিআরএম বুথে এবং মেট্রো রেলের টিকিটিং সিস্টেমে এই নতুন নোট গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন গ্রাহক এটিএম মেশিনে নতুন এক হাজার টাকার নোট জমা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সেটি গ্রহণ করা হয়নি।

এ বিষয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) শাহ আলম পাটোয়ারী বলেন, ‘নতুন এক হাজার টাকার নোট গ্রহণ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ এটিএম বুথের সফটওয়্যার সিস্টেমে নতুন টাকাটি এখনো সংযুক্ত করা হয়নি। এতে কয়েক ধাপে বিশেষ সিকিউরিটি কনফিগারেশন সম্পন্ন করতে হয়। এরই মধ্যে এই আপডেটের কাজ শুরু হয়েছে এবং খুব শিগগিরই এটি সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সমস্যার এখনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া না হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আপডেট ও কনফিগারেশন কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এর আগে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও বুথ ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন করা হলে এই বিড়ম্বনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গত ঈদুল আজহার ছুটিতে এটিএম বুথে টাকা না পেয়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রাহকদের। অন্যদিকে নতুন টাকা জমা দিতে পারেননি অনেকে। কিন্তু এটিএম বুথের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা টাকা জমা ও তোলার সুযো করেগ পাওয়ার কথা। ঈদের ছুটিতে সেই এটিএম বুথ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুথ থেকে বুথে ঘুরেও নগদ টাকা মিলছে না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, ছয়-সাতটি এটিএম বুথ ঘুরে যা নগদ মিলছে, তাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গ্রাহকদের নির্বিঘ্নে অর্থ লেনদেনের সুযোগ দিতে দেশের ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা সরবরাহের নির্দেশ ঈদের আগেই দেওয়া হয়েছে। এটিএম বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা মজুদ যাতে থাকে, তার সব ধরনের ব্যবস্থা ঈদের আগেই করে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ না মানলে কঠোর হবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

তিনি বলেন, ‘ছুটিতে যেসব ব্যাংক তাদের বুথগুলোয় পর্যাপ্ত টাকা মজুদ রাখেনি এবং টাকা শেষের পর সঙ্গে সঙ্গে রিফিলের ব্যবস্থা করছে না-এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এটিএম বুথে গ্রাহকদের হয়রানি কোনোভাবেই মেনে নেবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, সারা দেশে এটিএম বুথ রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৬টি এবং ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে সাত হাজার ১২টি।

ঈদের ছুটিতে অনেক গ্রাহক এসব বুথ থেকে টাকা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। যারা নতুন নোট নিয়ে এসেছে তারাও সমস্যায় পড়েছেন, কারণ প্রযুক্তিগত কারণে এসব নোট এখনো অটোমেটেড সিস্টেমে স্বীকৃতি পায়নি।

বিশ্লেষকদের মত- এই সমস্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত জনসচেতনতার অভাব এবং সময়মতো সফটওয়্যার আপডেট না করা। তারা মনে করছেন, আগেভাগে প্রস্তুতি ও প্রচারণা চালালে এই বিড়ম্বনা এড়ানো যেত।