ঢাকা , শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নদী ভাঙনে নিঃস্ব কুড়িগ্রামের হাজারো পরিবার

কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ১৬ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিচু এলাকা তলিয়ে গছে। এতে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় নদী পারের মানুষ। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কি. মি. এলাকা জুড়ে ভাঙছে। জরুরিভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ভাঙন রোধে প্রকল্প অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করবেন।

শুষ্ক মৌসুমে ও বন্যায় সব সময়ে ভাঙছে নদী। নদীর পানি কমলেও পাড় ভাঙে বাড়লেও ভাঙে। শুষ্ক মৌসুমে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাস ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ও ইসলামপুর গ্রামে গঙ্গাধর নদীর ভাঙনের স্বীকার হয়ে শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছে।

সাধারণত বর্ষায় নদীর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় নদী ভাঙন দেখা দেয়। তবে জেলার ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার, গঙ্গাধর, তিস্তাসহ প্রধান নদনদী এখন সারা বছরই ভাঙছে। ফলে প্রতিনিয়ত দেশের বৃহৎ নদীমাতৃক জেলার মানুষ কৃষি জমি, বসত ভিটেসহ সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বাড়ছে নদীর পানি সেই সঙ্গে ভাঙছে নদীর পাড়।

মাঝিপাড়া এলাকার গাজিউর রহমান ও আব্দুর রশিদ জানান, নদীতে পানি কমা-বাড়ার সঙ্গে নদনদীর ভাঙন তীব্ররূপ ধারণ করে। ভাঙনের মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাট-বাজারসহ বিস্তৃর্ণ জনপদ বিলীন হয়েছে। নদীপারের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। গত তিনদিনে এ এলাকার ১০জন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।

হরিপদ, সুবাষ চন্দ্র বলেন, বছরের পর বছর নদী ভাঙনের স্বীকার হয়ে নিঃস্ব হওয়া দারিদ্র পরিবারগুলো এখন নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বসবাস করছে। জন্মস্থান ছেড়ে অনেকেই হয়েছে দেশান্তরি। তাই ভাঙন রোধে সরকারকে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান রানা বলেন, কুড়িগ্রাম জেলাকে রক্ষা করতে এবং নদী কেন্দ্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব এবং বৈষম্য দায়ী।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট-বড় ১৬ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিচু এলাকা তলিয়ে গছে।

সেই সঙ্গে নদীর ভাঙন বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে এই কর্মকর্তা বলেন, রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলায় প্রায় ১৬ কিলোমিটার স্থায়ী তীর রক্ষা প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলায় নদনদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন অব্যাহত আছে। এসব ভাঙন রোধে জরুরিভিত্তিতে ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে আগামীতে নদীর ভাঙন থেকে কুড়িগ্রামবাসী রক্ষা পাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

জনপ্রিয়

নদী ভাঙনে নিঃস্ব কুড়িগ্রামের হাজারো পরিবার

প্রকাশিত: ১৬ ঘন্টা আগে

কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ১৬ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিচু এলাকা তলিয়ে গছে। এতে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় নদী পারের মানুষ। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কি. মি. এলাকা জুড়ে ভাঙছে। জরুরিভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ভাঙন রোধে প্রকল্প অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করবেন।

শুষ্ক মৌসুমে ও বন্যায় সব সময়ে ভাঙছে নদী। নদীর পানি কমলেও পাড় ভাঙে বাড়লেও ভাঙে। শুষ্ক মৌসুমে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাস ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ও ইসলামপুর গ্রামে গঙ্গাধর নদীর ভাঙনের স্বীকার হয়ে শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছে।

সাধারণত বর্ষায় নদীর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় নদী ভাঙন দেখা দেয়। তবে জেলার ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার, গঙ্গাধর, তিস্তাসহ প্রধান নদনদী এখন সারা বছরই ভাঙছে। ফলে প্রতিনিয়ত দেশের বৃহৎ নদীমাতৃক জেলার মানুষ কৃষি জমি, বসত ভিটেসহ সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বাড়ছে নদীর পানি সেই সঙ্গে ভাঙছে নদীর পাড়।

মাঝিপাড়া এলাকার গাজিউর রহমান ও আব্দুর রশিদ জানান, নদীতে পানি কমা-বাড়ার সঙ্গে নদনদীর ভাঙন তীব্ররূপ ধারণ করে। ভাঙনের মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাট-বাজারসহ বিস্তৃর্ণ জনপদ বিলীন হয়েছে। নদীপারের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। গত তিনদিনে এ এলাকার ১০জন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।

হরিপদ, সুবাষ চন্দ্র বলেন, বছরের পর বছর নদী ভাঙনের স্বীকার হয়ে নিঃস্ব হওয়া দারিদ্র পরিবারগুলো এখন নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বসবাস করছে। জন্মস্থান ছেড়ে অনেকেই হয়েছে দেশান্তরি। তাই ভাঙন রোধে সরকারকে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান রানা বলেন, কুড়িগ্রাম জেলাকে রক্ষা করতে এবং নদী কেন্দ্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব এবং বৈষম্য দায়ী।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট-বড় ১৬ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিচু এলাকা তলিয়ে গছে।

সেই সঙ্গে নদীর ভাঙন বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে এই কর্মকর্তা বলেন, রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলায় প্রায় ১৬ কিলোমিটার স্থায়ী তীর রক্ষা প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলায় নদনদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন অব্যাহত আছে। এসব ভাঙন রোধে জরুরিভিত্তিতে ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে আগামীতে নদীর ভাঙন থেকে কুড়িগ্রামবাসী রক্ষা পাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।