1. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  2. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  3. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  4. [email protected] : kmarsus : কালের দিগন্ত
  5. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  6. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  7. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  8. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  9. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  10. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  11. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৩ অপরাহ্ন

চিরিরবন্দরের শিক্ষা বিপ্লব: দুই দশকের পরিবর্তনে ‘শিক্ষানগরী’ খ্যাতি

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

গত দুই দশকে চিরিরবন্দর উপজেলায় শিক্ষাব্যবস্থার চেহারা নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। একের পর এক গড়ে ওঠা ভালো মানের বোর্ডিং স্কুল এবং শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টা এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি বলে মনে করছেন স্থানীয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা। আধুনিক শিখন পদ্ধতি, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, এবং নিয়মশৃঙ্খলার চর্চা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলে এলাহী বলেন, “গত দুই দশকে চিরিরবন্দর শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে। শুধু পাঠদান নয়, সহশিক্ষা কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত ভালো ফল করছে।”

এই শিক্ষার অগ্রযাত্রার ফলে, দিনাজপুর ছাড়াও রংপুর, রাজশাহী এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা চিরিরবন্দরে পড়াশোনার জন্য আসছে, যার ফলে উপজেলাটি ‘শিক্ষানগরী’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে; ভালো শিক্ষার পরিবেশ এবং শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এখানকার শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা শুধুমাত্র বইয়ের জ্ঞান নয়, বরং জীবনমুখী ও নৈতিক শিক্ষা অর্জন করছে, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করছে; অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট, কারণ তাদের সন্তানরা ভালো ফল করছে এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।

চিরিরবন্দরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানে দেড়শ থেকে আড়াই হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশ আবাসিক ছাত্র, এবং প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব খেলার মাঠ, গ্রন্থাগার, মসজিদ, এবং কম্পিউটার ল্যাবসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজের শিক্ষক জয়ন্ত কুমার রায় জানান, শিক্ষার্থীরা ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে, এরপর নির্দিষ্ট সময় ধরে পড়াশোনা, অ্যাসেম্বলি, এবং নিয়মিত ক্লাস চলে বিকেল পর্যন্ত। বিকেলে সহশিক্ষা কার্যক্রম ও খেলাধুলার সুযোগ রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে রাত ১০টা পর্যন্ত।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খরচও তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। নার্সারি থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক খরচ মাসে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা, আর টিউশন ফি ৫০০ থেকে ১,৫০০ টাকার মধ্যে।

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার বাসিন্দা আব্দুর রহিম তাঁর চার সন্তানকে চিরিরবন্দরের আবাসিক স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। তাঁর বড় দুই মেয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন এবং দুই ছেলে স্থানীয় আবাসিক স্কুলে। তিনি বলেন, “এলাকার পরিবেশ ভালো না, বাড়িতে থাকলে পড়াশোনা করবে না। তাই সন্তানদের ভালো ভবিষ্যতের জন্য আবাসিক স্কুলে দিয়েছি।”

শিক্ষার এই বিপ্লবের ফলে চিরিরবন্দর এখন ‘শিক্ষানগরী’ হিসেবে পরিচিত। শুধু স্থানীয় নয়, রংপুর, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনার জন্য আসছে। এর প্রমাণ হিসেবে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজ এবং আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের ১৪ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে, ৪ জন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট), ৭৮ জন বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১১ জন অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।

এছাড়া সাফল্যের উদাহরণ হিসেবে, রানীবন্দর এলাকার সানলাইট স্কুল ও কলেজের মাহমুদ হাসনাত এবার বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁর মতে, “মনিটরিং সিস্টেম এবং শিক্ষকদের সহযোগিতা প্রাইভেট স্কুলগুলোর ভালো ফলাফলের অন্যতম কারণ। নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে চলতে গিয়ে আমি অনেক শিখেছি, যা এখনো ধরে রেখেছি।”

আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আমজাদ হোসেন বলেন, “আমরা যুগোপযোগী শিক্ষার প্রসারে কাজ শুরু করেছিলাম, এবং এখন এর সুফল পাচ্ছি। আমার ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধিত্ব করছে, এর চেয়ে বড় সাফল্য আর কী হতে পারে?”

চিরিরবন্দরের এই শিক্ষার বিপ্লব শুধু স্থানীয় নয়, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে উঠছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
©  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট