ঢাকা , সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধের শুরু: হুতির হুঁশিয়ারি হাজারীবাগে ট্যানারির গুদামে আগুন দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মতিন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেফতার অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল উখিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মৎস্য উন্নয়নে ৫৬ জেলায় মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার

রিলসের নামে অশ্লীলতার প্রতিযোগিতা: ভিউয়ের পেছনে দৌড়ে সমাজ হারাচ্ছে মূল্যবোধ

বর্তমান সময়ের সোশ্যাল মিডিয়া যেন এক ভয়ংকর প্রতিযোগিতার মঞ্চে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে রিলসের নামে চলছে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও শরীর প্রদর্শনের এক অনিয়ন্ত্রিত স্রোত। কে কতটা কম পোশাকে, কতটা অশ্লীল ভঙ্গিমায় ভিডিও বানাতে পারে—সেই অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছে অনেক তরুণ-তরুণী।

এই অন্ধ দৌড়ে শুধুই বিনোদনের মোড়কে সমাজের নৈতিক ভিত্তি ধসে পড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব কনটেন্ট ভাইরাল হচ্ছে, তা মূলত টাকা ও জনপ্রিয়তার মোহে তৈরি করা হচ্ছে। যেসব তরুণ ভিডিও বানাচ্ছেন, অনেকেই ভাবছেন না—এ কনটেন্ট যদি একদিন নিজের সন্তান, পরিবার বা শিক্ষার্থীর সামনে পড়ে, তারা কী ভাববে, কী শিখবে?

সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে, পরিবারের সদস্যরাও এখন এসব অশ্লীল ভিডিও তৈরিতে উৎসাহ দিচ্ছেন, কেউ কেউ সরাসরি অংশ নিচ্ছেন। আগে পরিবার মানেই ছিল নৈতিক শিক্ষা, সুশৃঙ্খলতা ও লজ্জাবোধের জায়গা। এখন অনেক পরিবারের অভ্যন্তরেই এসব কনটেন্ট তৈরির “স্টুডিও” বসেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধুই একটি বা দুটি ব্যক্তির বিচ্যুতি নয়—একটি প্রজন্মের মানসিকতার সংকট। শরীর দেখিয়ে, বিকৃত রুচির ভিডিও বানিয়ে যে সহজ খ্যাতি ও অর্থ উপার্জনের চিন্তা প্রবল হয়ে উঠছে, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি। যদি এখনই সামাজিক সচেতনতা তৈরি না হয়, তাহলে সামনে নৈতিক শূন্যতার মুখোমুখি হবে আমাদের সমাজ।

‘ভিউ’ মানেই এখন সাফল্য, এমন ধারণা সামাজিক রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। ভিউয়ের সংখ্যা দিয়ে একজন মানুষের কদর নির্ধারণ করা হচ্ছে, উপেক্ষিত হচ্ছে তার মূল্যবোধ, মেধা ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। এই ভিউ-সর্বস্ব সংস্কৃতি আমাদেরকে অন্ধ করে ফেলছে।

প্রযুক্তি আমাদের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে, কিন্তু সেটিকে যদি আমরা শুধুই ভোগের হাতিয়ার বানাই, তাহলে সামাজিক অবক্ষয় অনিবার্য। প্রয়োজন সচেতনতা, আত্মসমালোচনা ও দায়িত্বশীল ব্যবহার। সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রকে এখনই ভূমিকা রাখতে হবে—না হলে যেটুকু জনপ্রিয়তা বা আয় আমরা অর্জন করি, তা-ও একদিন হয়ে উঠবে আত্মহীন শূন্যতার প্রতীক।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় মুক্তির পথ একটাই—নৈতিকতা, মেধা ও মানবিক মূল্যবোধকে এগিয়ে রাখা।

জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি

রিলসের নামে অশ্লীলতার প্রতিযোগিতা: ভিউয়ের পেছনে দৌড়ে সমাজ হারাচ্ছে মূল্যবোধ

প্রকাশিত: ১০:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

বর্তমান সময়ের সোশ্যাল মিডিয়া যেন এক ভয়ংকর প্রতিযোগিতার মঞ্চে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে রিলসের নামে চলছে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও শরীর প্রদর্শনের এক অনিয়ন্ত্রিত স্রোত। কে কতটা কম পোশাকে, কতটা অশ্লীল ভঙ্গিমায় ভিডিও বানাতে পারে—সেই অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছে অনেক তরুণ-তরুণী।

এই অন্ধ দৌড়ে শুধুই বিনোদনের মোড়কে সমাজের নৈতিক ভিত্তি ধসে পড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব কনটেন্ট ভাইরাল হচ্ছে, তা মূলত টাকা ও জনপ্রিয়তার মোহে তৈরি করা হচ্ছে। যেসব তরুণ ভিডিও বানাচ্ছেন, অনেকেই ভাবছেন না—এ কনটেন্ট যদি একদিন নিজের সন্তান, পরিবার বা শিক্ষার্থীর সামনে পড়ে, তারা কী ভাববে, কী শিখবে?

সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে, পরিবারের সদস্যরাও এখন এসব অশ্লীল ভিডিও তৈরিতে উৎসাহ দিচ্ছেন, কেউ কেউ সরাসরি অংশ নিচ্ছেন। আগে পরিবার মানেই ছিল নৈতিক শিক্ষা, সুশৃঙ্খলতা ও লজ্জাবোধের জায়গা। এখন অনেক পরিবারের অভ্যন্তরেই এসব কনটেন্ট তৈরির “স্টুডিও” বসেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধুই একটি বা দুটি ব্যক্তির বিচ্যুতি নয়—একটি প্রজন্মের মানসিকতার সংকট। শরীর দেখিয়ে, বিকৃত রুচির ভিডিও বানিয়ে যে সহজ খ্যাতি ও অর্থ উপার্জনের চিন্তা প্রবল হয়ে উঠছে, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি। যদি এখনই সামাজিক সচেতনতা তৈরি না হয়, তাহলে সামনে নৈতিক শূন্যতার মুখোমুখি হবে আমাদের সমাজ।

‘ভিউ’ মানেই এখন সাফল্য, এমন ধারণা সামাজিক রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। ভিউয়ের সংখ্যা দিয়ে একজন মানুষের কদর নির্ধারণ করা হচ্ছে, উপেক্ষিত হচ্ছে তার মূল্যবোধ, মেধা ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। এই ভিউ-সর্বস্ব সংস্কৃতি আমাদেরকে অন্ধ করে ফেলছে।

প্রযুক্তি আমাদের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে, কিন্তু সেটিকে যদি আমরা শুধুই ভোগের হাতিয়ার বানাই, তাহলে সামাজিক অবক্ষয় অনিবার্য। প্রয়োজন সচেতনতা, আত্মসমালোচনা ও দায়িত্বশীল ব্যবহার। সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রকে এখনই ভূমিকা রাখতে হবে—না হলে যেটুকু জনপ্রিয়তা বা আয় আমরা অর্জন করি, তা-ও একদিন হয়ে উঠবে আত্মহীন শূন্যতার প্রতীক।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় মুক্তির পথ একটাই—নৈতিকতা, মেধা ও মানবিক মূল্যবোধকে এগিয়ে রাখা।