ঢাকা , সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধের শুরু: হুতির হুঁশিয়ারি হাজারীবাগে ট্যানারির গুদামে আগুন দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মতিন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেফতার অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল উখিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মৎস্য উন্নয়নে ৫৬ জেলায় মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার

৪৮ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ২০০

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। পাশাপাশি উত্তর গাজার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক গাজা সিটির দিকে সরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে উপত্যকার সরকারি মিডিয়া অফিস।

শনিবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে তারা এই তথ্য জানায়। রোববার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার ইতিহাসে আরও একটি ভয়াবহ অধ্যায় যুক্ত হয়েছে। শুধু উত্তর গাজা গভর্নরেটেই গত দুই দিনে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা ওই অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি, ৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে গাজা শহরের দিওক ওজারপূর্বক স্থানান্তরিত করেছে। অথচ সেখানে তাদের আশ্রয় নেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও নেই।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের হামলার স্থানে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। যার কারণে প্রায় ১৪০ জনের লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।

এছাড়া, উত্তর গাজার জাবালিয়ার তেল আল-জাতার এলাকা, বাইত লাহিয়া শহর ও আশপাশের এলাকায় শরণার্থীদের জন্য স্থাপন করা শত শত তাঁবু পুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি ড্রোনগুলো। গাজার মিডিয়া অফিস বলছে, এই ঘটনার সময় আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা ও নির্লজ্জ সহযোগিতা গভীর উদ্বেগজনক।

গাজা শহরের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মিডিয়া অফিস। সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র বা তাবুর ঘাটতির কারণে হাজার হাজার পরিবারকে রাস্তায় বসবাস করতে হচ্ছে, বিশেষ করে আল-জালাআ স্ট্রিট ও আল-সাফতাউই এলাকায়। খাদ্য, পানি ও ওষুধের সম্পূর্ণ অনুপস্থিতি এবং টানা অবরোধ ও বিমান হামলার মধ্যে তারা চরম মানবিক সংকটে রয়েছেন।

এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে গণহত্যা বন্ধ করতে, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক দল পাঠাতে, অবরোধ খুলে মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলি নেতাদের আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক চার দিনের উপসাগরীয় দেশগুলোতে সফরের সময় ইসরায়েলি বাহিনী ৩৭৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর আগের চার দিনে এই সংখ্যা ছিল ১০০ জনের কাছাকাছি, অর্থাৎ ট্রাম্পের সফরকালীন নিহতের সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়েছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এই হিসাব পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের খাদ্য, পানি ও ওষুধ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রেখেছে। এরপর গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙে পুনরায় গাজায় হামলা শুরু করে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি

৪৮ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ২০০

প্রকাশিত: ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। পাশাপাশি উত্তর গাজার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক গাজা সিটির দিকে সরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে উপত্যকার সরকারি মিডিয়া অফিস।

শনিবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে তারা এই তথ্য জানায়। রোববার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার ইতিহাসে আরও একটি ভয়াবহ অধ্যায় যুক্ত হয়েছে। শুধু উত্তর গাজা গভর্নরেটেই গত দুই দিনে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা ওই অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি, ৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে গাজা শহরের দিওক ওজারপূর্বক স্থানান্তরিত করেছে। অথচ সেখানে তাদের আশ্রয় নেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও নেই।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের হামলার স্থানে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। যার কারণে প্রায় ১৪০ জনের লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।

এছাড়া, উত্তর গাজার জাবালিয়ার তেল আল-জাতার এলাকা, বাইত লাহিয়া শহর ও আশপাশের এলাকায় শরণার্থীদের জন্য স্থাপন করা শত শত তাঁবু পুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি ড্রোনগুলো। গাজার মিডিয়া অফিস বলছে, এই ঘটনার সময় আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা ও নির্লজ্জ সহযোগিতা গভীর উদ্বেগজনক।

গাজা শহরের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মিডিয়া অফিস। সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র বা তাবুর ঘাটতির কারণে হাজার হাজার পরিবারকে রাস্তায় বসবাস করতে হচ্ছে, বিশেষ করে আল-জালাআ স্ট্রিট ও আল-সাফতাউই এলাকায়। খাদ্য, পানি ও ওষুধের সম্পূর্ণ অনুপস্থিতি এবং টানা অবরোধ ও বিমান হামলার মধ্যে তারা চরম মানবিক সংকটে রয়েছেন।

এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে গণহত্যা বন্ধ করতে, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক দল পাঠাতে, অবরোধ খুলে মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলি নেতাদের আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক চার দিনের উপসাগরীয় দেশগুলোতে সফরের সময় ইসরায়েলি বাহিনী ৩৭৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর আগের চার দিনে এই সংখ্যা ছিল ১০০ জনের কাছাকাছি, অর্থাৎ ট্রাম্পের সফরকালীন নিহতের সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়েছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এই হিসাব পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের খাদ্য, পানি ও ওষুধ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রেখেছে। এরপর গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙে পুনরায় গাজায় হামলা শুরু করে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।