ঢাকা , সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধের শুরু: হুতির হুঁশিয়ারি হাজারীবাগে ট্যানারির গুদামে আগুন দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মতিন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেফতার অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল উখিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মৎস্য উন্নয়নে ৫৬ জেলায় মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার

ইসরায়েলের নতুন নীলনকশা ফাঁস: গাজাকে তিন টুকরো করে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা

গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হলে ফিলিস্তিনিদের তিনটি পৃথক নিরাপত্তা অঞ্চলে জোরপূর্বক স্থানান্তরের এক গোপন পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি এই পরিকল্পনার একটি গোপন মানচিত্র ফাঁস হয়েছে, যা কূটনীতিকদের মাধ্যমে ব্রিটেনের সানডে টাইমসের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।

ফাঁস হওয়া মানচিত্র অনুযায়ী, গাজার উত্তর, কেন্দ্র এবং দক্ষিণে চারটি সামরিক নিয়ন্ত্রিত এলাকা তৈরি করা হবে। এর মধ্যেই থাকবে তিনটি বেসামরিক অঞ্চল, যেখানে ফিলিস্তিনিদের বসবাসে বাধ্য করা হতে পারে। এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এমনকি নিজেদের জমি বা বাড়িতে যাতায়াতের জন্যও অনুমতির প্রয়োজন হবে। পণ্য পরিবহনেও চলবে কড়া নজরদারি ও নিরাপত্তা যাচাই।

সূত্রমতে, এই পরিকল্পনাটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘তৃতীয় পর্যায়: গাজার সম্পূর্ণ দখল’ নামক কৌশলের অংশ। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, খান ইউনিসের উত্তরে একটি নতুন সামরিক করিডোর নির্মাণ করা হবে, যা গাজা সিটির দক্ষিণে তৈরি হওয়া নেতজারিম করিডোরের আদলে তৈরি হবে। এই করিডোর গাজার দক্ষিণের রাফার উত্তরের অঞ্চলগুলোকে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই ইসরায়েলি বুলডোজার দিয়ে ওই এলাকার জমি খালি করার কাজ শুরু হবে।

এছাড়াও, ইসরায়েল গাজা ও এর সীমান্তের মাঝে একটি ব্যাপক ‘বাফার জোন’ তৈরি করবে, যা পুরো উপত্যকাকে ঘিরে থাকবে। কেন্দ্রীয় গাজায় নতুন সেনা অঞ্চলের গঠন এবং এই বাফার জোন তৈরির কাজ শেষ করতে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটিকে গাজা দখলের জন্য ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মানচিত্রে আরও দেখা যায়, এই নতুন বেসামরিক অঞ্চলগুলোতে প্রায় এক ডজন নতুন মানবিক সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এই বিতরণ ব্যবস্থা জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে, বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরিচালনার একটি বিতর্কিত পরিকল্পনার অংশ। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশে পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে।

আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গাজাবাসী তাদের নিজ ভূমি ও বসতভিটা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং গোটা উপত্যকাজুড়ে সাধারণ মানুষ চলাচলের স্বাধীনতা হারাবে।

জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি

ইসরায়েলের নতুন নীলনকশা ফাঁস: গাজাকে তিন টুকরো করে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হলে ফিলিস্তিনিদের তিনটি পৃথক নিরাপত্তা অঞ্চলে জোরপূর্বক স্থানান্তরের এক গোপন পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি এই পরিকল্পনার একটি গোপন মানচিত্র ফাঁস হয়েছে, যা কূটনীতিকদের মাধ্যমে ব্রিটেনের সানডে টাইমসের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।

ফাঁস হওয়া মানচিত্র অনুযায়ী, গাজার উত্তর, কেন্দ্র এবং দক্ষিণে চারটি সামরিক নিয়ন্ত্রিত এলাকা তৈরি করা হবে। এর মধ্যেই থাকবে তিনটি বেসামরিক অঞ্চল, যেখানে ফিলিস্তিনিদের বসবাসে বাধ্য করা হতে পারে। এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এমনকি নিজেদের জমি বা বাড়িতে যাতায়াতের জন্যও অনুমতির প্রয়োজন হবে। পণ্য পরিবহনেও চলবে কড়া নজরদারি ও নিরাপত্তা যাচাই।

সূত্রমতে, এই পরিকল্পনাটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘তৃতীয় পর্যায়: গাজার সম্পূর্ণ দখল’ নামক কৌশলের অংশ। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, খান ইউনিসের উত্তরে একটি নতুন সামরিক করিডোর নির্মাণ করা হবে, যা গাজা সিটির দক্ষিণে তৈরি হওয়া নেতজারিম করিডোরের আদলে তৈরি হবে। এই করিডোর গাজার দক্ষিণের রাফার উত্তরের অঞ্চলগুলোকে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই ইসরায়েলি বুলডোজার দিয়ে ওই এলাকার জমি খালি করার কাজ শুরু হবে।

এছাড়াও, ইসরায়েল গাজা ও এর সীমান্তের মাঝে একটি ব্যাপক ‘বাফার জোন’ তৈরি করবে, যা পুরো উপত্যকাকে ঘিরে থাকবে। কেন্দ্রীয় গাজায় নতুন সেনা অঞ্চলের গঠন এবং এই বাফার জোন তৈরির কাজ শেষ করতে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটিকে গাজা দখলের জন্য ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মানচিত্রে আরও দেখা যায়, এই নতুন বেসামরিক অঞ্চলগুলোতে প্রায় এক ডজন নতুন মানবিক সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এই বিতরণ ব্যবস্থা জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে, বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরিচালনার একটি বিতর্কিত পরিকল্পনার অংশ। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশে পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে।

আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গাজাবাসী তাদের নিজ ভূমি ও বসতভিটা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং গোটা উপত্যকাজুড়ে সাধারণ মানুষ চলাচলের স্বাধীনতা হারাবে।