ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধের শুরু: হুতির হুঁশিয়ারি হাজারীবাগে ট্যানারির গুদামে আগুন দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মতিন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেফতার অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল উখিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মৎস্য উন্নয়নে ৫৬ জেলায় মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ‘ভালো মশা’: বাংলাদেশে উলবাকিয়া প্রযুক্তির সফল অগ্রগতি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশে একটি বড় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল উলবাকিয়া সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টি মশা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা ঢাকা শহরের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। এই মশাকে ‘ভালো মশা’ বলা হচ্ছে। এটি ডেঙ্গু ও অন্যান্য আর্বোভাইরাল ভাইরাসজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি নিরাপদ ও জৈবিক পদ্ধতির পথ উন্মুক্ত করছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।

 

গবেষণা দলের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গহোফার মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিডিডিআর,বি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যাচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ জার্নালে।

 

২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেকর্ড ৩ লাখ ২১ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হন এবং ১ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু হয়, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর। প্রচলিত কীটনাশক ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে এই নতুন প্রযুক্তি ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনা এনে দিয়েছে।

 

উলবাকিয়া হলো একটি প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া, যা সাধারণত কিছু কীটপতঙ্গের দেহে থাকে, কিন্তু এডিস মশায় থাকে না। গবেষকরা এটিকে এডিস মশায় সংক্রমিত করে দুটি কৌশলে ব্যবহার করছেন:

১. দমন কৌশল – যেখানে শুধু পুরুষ ‘ভালো মশা’ ছাড়া হয়, তারা স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হলেও ডিম ফুটতে পারে না।

২. প্রতিস্থাপন কৌশল – যেখানে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় উলবাকিয়া-সংক্রমিত মশা ছাড়া হয়, ফলে প্রজন্মের পর প্রজন্মে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং বন্য মশাদের প্রতিস্থাপন করে।

 

এই কৌশল অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত সফলতা অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫৭৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এই প্রেক্ষাপটে ‘ভালো মশা’ প্রযুক্তিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে একটি সম্ভাবনাময় সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ‘ভালো মশা’: বাংলাদেশে উলবাকিয়া প্রযুক্তির সফল অগ্রগতি

প্রকাশিত: ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশে একটি বড় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল উলবাকিয়া সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টি মশা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা ঢাকা শহরের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। এই মশাকে ‘ভালো মশা’ বলা হচ্ছে। এটি ডেঙ্গু ও অন্যান্য আর্বোভাইরাল ভাইরাসজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি নিরাপদ ও জৈবিক পদ্ধতির পথ উন্মুক্ত করছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।

 

গবেষণা দলের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গহোফার মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিডিডিআর,বি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যাচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ জার্নালে।

 

২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেকর্ড ৩ লাখ ২১ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হন এবং ১ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু হয়, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর। প্রচলিত কীটনাশক ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে এই নতুন প্রযুক্তি ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনা এনে দিয়েছে।

 

উলবাকিয়া হলো একটি প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া, যা সাধারণত কিছু কীটপতঙ্গের দেহে থাকে, কিন্তু এডিস মশায় থাকে না। গবেষকরা এটিকে এডিস মশায় সংক্রমিত করে দুটি কৌশলে ব্যবহার করছেন:

১. দমন কৌশল – যেখানে শুধু পুরুষ ‘ভালো মশা’ ছাড়া হয়, তারা স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হলেও ডিম ফুটতে পারে না।

২. প্রতিস্থাপন কৌশল – যেখানে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় উলবাকিয়া-সংক্রমিত মশা ছাড়া হয়, ফলে প্রজন্মের পর প্রজন্মে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং বন্য মশাদের প্রতিস্থাপন করে।

 

এই কৌশল অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত সফলতা অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫৭৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এই প্রেক্ষাপটে ‘ভালো মশা’ প্রযুক্তিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে একটি সম্ভাবনাময় সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে।