ঢাকা , সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধের শুরু: হুতির হুঁশিয়ারি হাজারীবাগে ট্যানারির গুদামে আগুন দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মতিন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেফতার অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল উখিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মৎস্য উন্নয়নে ৫৬ জেলায় মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার

ডাকাতিয়া নদীতে আবারও অবৈধ বাঁধ: রায়পুরে প্রভাবশালীদের মাছ চাষে হুমকির মুখে পরিবেশ ও কৃষি

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ডাকাতিয়া নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। পৌরসভার অংশের প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে নদীর স্বাভাবিক জলপ্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে শুধু নদীর পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে না, কৃষিকাজ ও মাছের স্বাভাবিক চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রায়পুর উপজেলা পরিষদে যাওয়ার পথে পীর বাড়ি সংলগ্ন এলাকাজুড়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে জলপ্রবাহ আটকে মাছ চাষ চলছে। বাঁধে নেটও বসানো হয়েছে, যাতে মাছ ও পানি প্রবাহিত না হতে পারে। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে আশপাশের এলাকায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকেই এ নদীতে মাছ চাষ করে আসছেন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি, মোকসেদ উল্যা। সময়ের পরিবর্তনে তার সহযোগীদের তালিকা বদলালেও নদী দখলের প্রবণতা কমেনি। বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অনুমতি নিয়েই তিনি মাছ চাষ করছেন বলে দাবি করেছেন নিজেই। তার ভাষায়, ‘নদীকে ভাগ করে দুই পাশে মাছ চাষ করি। এখন বিএনপি নেতারাও এতে যুক্ত হয়েছেন।’

এর আগেও গত বছরের ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নদী ও সংযোগ খাল থেকে বেশ কয়েকটি বড় বাঁধ অপসারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের অভিযানের পর মাস না যেতেই নতুন করে বাঁধ স্থাপন করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ ইজ জামান খান বলেন, ‘গত বছর আমরা সব বাঁধ সরিয়ে দিয়েছিলাম। এবারও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আবার অভিযান চালানো হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, ‘সরকারি নদী বা খাল দখল করে মাছ চাষ করা সম্পূর্ণ অবৈধ। অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি নদীতে বাঁধ দিতে পারে না। আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আইন অনুযায়ী, প্রবহমান জলাশয়ে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, কিংবা পানিপ্রবাহ ও মাছ চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে দণ্ডনীয় অপরাধ গণ্য হয়। এ অবস্থায় স্থানীয়দের দাবি, সরকারি আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে আনা হোক।

জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি

ডাকাতিয়া নদীতে আবারও অবৈধ বাঁধ: রায়পুরে প্রভাবশালীদের মাছ চাষে হুমকির মুখে পরিবেশ ও কৃষি

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ডাকাতিয়া নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। পৌরসভার অংশের প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে নদীর স্বাভাবিক জলপ্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে শুধু নদীর পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে না, কৃষিকাজ ও মাছের স্বাভাবিক চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রায়পুর উপজেলা পরিষদে যাওয়ার পথে পীর বাড়ি সংলগ্ন এলাকাজুড়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে জলপ্রবাহ আটকে মাছ চাষ চলছে। বাঁধে নেটও বসানো হয়েছে, যাতে মাছ ও পানি প্রবাহিত না হতে পারে। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে আশপাশের এলাকায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকেই এ নদীতে মাছ চাষ করে আসছেন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি, মোকসেদ উল্যা। সময়ের পরিবর্তনে তার সহযোগীদের তালিকা বদলালেও নদী দখলের প্রবণতা কমেনি। বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অনুমতি নিয়েই তিনি মাছ চাষ করছেন বলে দাবি করেছেন নিজেই। তার ভাষায়, ‘নদীকে ভাগ করে দুই পাশে মাছ চাষ করি। এখন বিএনপি নেতারাও এতে যুক্ত হয়েছেন।’

এর আগেও গত বছরের ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নদী ও সংযোগ খাল থেকে বেশ কয়েকটি বড় বাঁধ অপসারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের অভিযানের পর মাস না যেতেই নতুন করে বাঁধ স্থাপন করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ ইজ জামান খান বলেন, ‘গত বছর আমরা সব বাঁধ সরিয়ে দিয়েছিলাম। এবারও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আবার অভিযান চালানো হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, ‘সরকারি নদী বা খাল দখল করে মাছ চাষ করা সম্পূর্ণ অবৈধ। অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি নদীতে বাঁধ দিতে পারে না। আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আইন অনুযায়ী, প্রবহমান জলাশয়ে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, কিংবা পানিপ্রবাহ ও মাছ চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে দণ্ডনীয় অপরাধ গণ্য হয়। এ অবস্থায় স্থানীয়দের দাবি, সরকারি আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে আনা হোক।