ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ইসরাইলের গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগ ইয়েমেনে হামলা চালাতে গিয়ে সাগরে ডুবে গেল সর্বাধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান হামলার বদলা নিতে সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদি মানবিক করিডর নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রেসসচিব ১৩০টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের দিকে তাক করা আছে : পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেয়ার মার্কিন প্রস্তাবে সিরিয়ার ‘অসম্মতি’ ঢাকায় ছোটপর্দার অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে দীর্ঘতম ম্যাচের নতুন রেকর্ড বাংলাদেশের কাশ্মীর হামলার জেরে ফের সিসিএস বৈঠকে বসছেন মোদি, সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে লিবারেল পার্টির জয়, প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি

ইয়েমেনে হামলা চালাতে গিয়ে সাগরে ডুবে গেল সর্বাধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান

ইয়েমেনে হামলা চালাতে গিয়ে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান সাগরে হারিয়ে গেছে। এটি মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলোর অন্যতম। এই মডেলের একটি যুদ্ধবিমানের দাম ছয় কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭২৯ কোটি টাকার সমান)।

গতকাল সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ফিরে এসে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানে নামতে গিয়ে যুদ্ধবিমানটি সাগরে পড়ে যায়। তবে পাইলট বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। খবর সিএনএনের।

মার্কিন নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরীতে অবতরণের সময় যুদ্ধবিমানটি সমুদ্রে পড়ে এবং হারিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম।

এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত এড়াতে রণতরী হ্যারি এস ট্রুম্যান হঠাৎ দ্রুত বাক নেয়। যার ফলে যুদ্ধবিমানটি পানিতে পড়ে যায়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলে হয়েছে, সোমবার ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার পর হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিমানবাহী রণতরীতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে সেগুলো রণতরীতে আঘাত হেনেছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এক নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন রয়েছে এবং এই ঘটনার সময় লোহিত সাগরে ছিল। সোমবার হামলার পর মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, তাদের রণতরী ও এর বিমান শাখা অভিযান পরিচালনায় ‘সম্পূর্ণরূপে সক্ষম’ রয়েছে।

গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। হামলায় আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ধ্বংস হয়েছে। তাতে অন্তত ৬৮ জন নিহত ও আরও ৪৭ জন আহত হন।

হুথি-নিয়ন্ত্রিত দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রটি মার্কিন বিমানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ওই সময় সেখানে ১১৫ অভিবাসী ছিল। হুথি একে ‘সম্পূর্ণ যুদ্ধাপরাধ’ বলে আখ্যায়িত করে।

হুথি-নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, হামলায় আশ্রয়কেন্দ্রটির ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্কিন বিমান থেকে নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরিত হয়নি এবং বিশেষজ্ঞ দল তা নিষ্ক্রিয় করার কাজ করছে।

ইয়েমেনি বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এক হাজার ২০০-র বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হুথি সশস্ত্র বাহিনী ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর, আরব সাগর, বাবেল মান্দেব প্রণালী ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইল ও এর মিত্র দেশগুলোর জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে।

প্রায় ১৫ মাসের সংঘাতের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর হুথিরাও হামলা স্থগিত করে। তবে গত মাসে ইসরাইল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করলে হুথিরা আবারও ইসরাইল ও সাগরে পশ্চিমা জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে।

ইসরাইল ও মার্কিন বাহিনীও ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে আসছে। যাতে দেশটিতে ব্যাপক ক্ষতির সঙ্গে বেসামরিক হতাহতের পরিমাণও বাড়ছে।

জনপ্রিয়

ইসরাইলের গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগ

ইয়েমেনে হামলা চালাতে গিয়ে সাগরে ডুবে গেল সর্বাধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান

প্রকাশিত: ৫ ঘন্টা আগে

ইয়েমেনে হামলা চালাতে গিয়ে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান সাগরে হারিয়ে গেছে। এটি মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলোর অন্যতম। এই মডেলের একটি যুদ্ধবিমানের দাম ছয় কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭২৯ কোটি টাকার সমান)।

গতকাল সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ফিরে এসে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানে নামতে গিয়ে যুদ্ধবিমানটি সাগরে পড়ে যায়। তবে পাইলট বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। খবর সিএনএনের।

মার্কিন নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরীতে অবতরণের সময় যুদ্ধবিমানটি সমুদ্রে পড়ে এবং হারিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম।

এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত এড়াতে রণতরী হ্যারি এস ট্রুম্যান হঠাৎ দ্রুত বাক নেয়। যার ফলে যুদ্ধবিমানটি পানিতে পড়ে যায়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলে হয়েছে, সোমবার ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার পর হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিমানবাহী রণতরীতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে সেগুলো রণতরীতে আঘাত হেনেছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এক নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন রয়েছে এবং এই ঘটনার সময় লোহিত সাগরে ছিল। সোমবার হামলার পর মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, তাদের রণতরী ও এর বিমান শাখা অভিযান পরিচালনায় ‘সম্পূর্ণরূপে সক্ষম’ রয়েছে।

গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। হামলায় আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ধ্বংস হয়েছে। তাতে অন্তত ৬৮ জন নিহত ও আরও ৪৭ জন আহত হন।

হুথি-নিয়ন্ত্রিত দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রটি মার্কিন বিমানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ওই সময় সেখানে ১১৫ অভিবাসী ছিল। হুথি একে ‘সম্পূর্ণ যুদ্ধাপরাধ’ বলে আখ্যায়িত করে।

হুথি-নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, হামলায় আশ্রয়কেন্দ্রটির ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্কিন বিমান থেকে নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরিত হয়নি এবং বিশেষজ্ঞ দল তা নিষ্ক্রিয় করার কাজ করছে।

ইয়েমেনি বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এক হাজার ২০০-র বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হুথি সশস্ত্র বাহিনী ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর, আরব সাগর, বাবেল মান্দেব প্রণালী ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইল ও এর মিত্র দেশগুলোর জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে।

প্রায় ১৫ মাসের সংঘাতের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর হুথিরাও হামলা স্থগিত করে। তবে গত মাসে ইসরাইল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করলে হুথিরা আবারও ইসরাইল ও সাগরে পশ্চিমা জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে।

ইসরাইল ও মার্কিন বাহিনীও ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে আসছে। যাতে দেশটিতে ব্যাপক ক্ষতির সঙ্গে বেসামরিক হতাহতের পরিমাণও বাড়ছে।