ঢাকা , রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
জুলাই-আগস্ট স্মৃতি জাদুঘর করবে সরকার: ফারুকী এসএসসি পরবর্তী সময়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স শুরু বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নতুন প্রজন্ম গড়তে শিক্ষা পরিবেশ উন্নয়নের তাগিদ সোমবার থেকে দ্বিতীয় ধাপের রাজনৈতিক সংলাপ শুরু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল রোববার দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে উন্নতি হয়েছে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত মে মাসে নারী-শিশু নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র উদ্বেগজনক: এমএসএফ প্রতিবেদন জলাবদ্ধতা মোকাবিলায় সিলেটে সিসিকের কন্ট্রোল রুম চালু কুষ্টিয়ায় নারী ও শিশুসহ ৯ বাংলাদেশিকে পুশইন করলো বিএসএফ রাতে লিচু খাওয়া: উপকারিতা ও সতর্কতা

মাঠে ঘাটে বিক্রি হচ্ছে বিপজ্জনক জ্বালানি পরিবেশদূষণের সঙ্গে আছে নাশকতা দুর্ঘটনার ঝুঁকি

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে অকটেন, পেট্রল, ডিজেলের মতো বিপজ্জনক দাহ্য জ্বালানি। পুলিশের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই রাস্তার ধারে ছোট ছোট দোকান ও খুচরা মোটর পার্টসের দোকানে এসব জ্বালানি বিক্রি হচ্ছে; যার বেশির ভাগই ভেজাল। এ জ্বালানি ব্যবহারে যানবাহনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আর খোলা অবস্থায় বিক্রি হওয়ায় নাশকতার কাজেও তা ব্যবহারের শঙ্কা রয়েছে। আছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তেলের ডিপোকেন্দ্রিক যে ব্যবসায়ীরা আছেন তাঁদের মাধ্যমেই অবৈধভাবে খোলাবাজারে তেল চলে যাচ্ছে।

পেট্রোলিয়াম-সংক্রান্ত আইন অনুসারে, জ্বালানি তেল-পেট্রল-ডিজেলের ব্যবসার জন্য বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। শুধু ঢাকায় ৪০ এবং পুরো ঢাকা বিভাগে আছে ১৫০টির মতো পেট্রলপাম্প স্টেশন; যেগুলো বৈধ উপায়ে তেল বিক্রি করছে। অথচ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় সড়কের ওপরে বিভিন্ন দোকানে প্লাস্টিকের বোতলে পেট্রল-অকটেন বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্নমানের এসব ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি হচ্ছে, এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতি হয়। ভেজাল এ তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে।

সরেজমিনে ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মিরপুর-১, মিরপুর ১১, ধোলাইখাল, গাবতলী এবং ঢাকার পাশে গাজীপুর, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জে প্রধান সড়কের ওপর মোটর পার্টসের দোকানসহ ছোটখাটো মুদি দোকানে দেদার এসব দাহ্য পদার্থ বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতারা অবৈধভাবে তেল সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। আগে লুকিয়ে এসব বিক্রি করলেও এখন প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় কোনো রাখঢাক ছাড়াই খোলা জায়গায় পেট্রল-অকটেন বিক্রি হচ্ছে। মূলত মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, বাসচালকরা এসব জ্বালানি বেশি কেনেন।

এসব অবৈধ দোকানের মালিকরা স্বীকার করেন, সরকারি যানবাহনের একশ্রেণির অসাধু চালক তাঁদের কাছে অবৈধভাবে নিয়মিত তেল সরবরাহ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট কারের অসাধু চালকরাও চুরি করে এসব দোকানে তেল বিক্রি করেন। এ ক্ষেত্রে চালকরা পেট্রলপাম্পের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে তা বিক্রি করে দেন। তালিকায় আরও আছেন বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম-জাতীয় গাড়ির চালকরা। তাঁরাও গোপনে তেল বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন পেট্রলপাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাই পথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে ভেজাল এ তেল বিক্রি করা হয়। পেট্রলপাম্প মালিকরা জানান, এখন ছোট ডিসপেনসার দিয়ে ব্যারেলের মধ্য থেকে তেল বিক্রি হচ্ছে। এটি পুরোটাই অবৈধ। তাঁরা জেলা প্রশাসক-পুলিশকে বলে অনেকবার এ অবৈধ কাজ বন্ধের চেষ্টা করেন। বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল বলেন, ‘এ ধরনের দাহ্য পদার্থ খোলাবাজারে বিক্রি করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। লন্ড্রির দোকান, মুদি দোকান, গ্রামগঞ্জ-হাটবাজার যেখানে খুশি বিক্রি হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হলে পুলিশের র‌্যাপিড কম্বিং অপারেশন প্রয়োজন। এ ধরনের তেলে ভেজাল থাকার শঙ্কা শতভাগ। এরা কোনো ক্যাশমেমো দেয় না, এদের কোনো পরিচয়ও নেই। এ তেলের মান পরীক্ষা করার কোনো বিষয় নেই। এতে গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি হয় এবং পরিবেশদূষণও বাড়ে। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও আছে।’

জনপ্রিয়

জুলাই-আগস্ট স্মৃতি জাদুঘর করবে সরকার: ফারুকী

মাঠে ঘাটে বিক্রি হচ্ছে বিপজ্জনক জ্বালানি পরিবেশদূষণের সঙ্গে আছে নাশকতা দুর্ঘটনার ঝুঁকি

প্রকাশিত: ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে অকটেন, পেট্রল, ডিজেলের মতো বিপজ্জনক দাহ্য জ্বালানি। পুলিশের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই রাস্তার ধারে ছোট ছোট দোকান ও খুচরা মোটর পার্টসের দোকানে এসব জ্বালানি বিক্রি হচ্ছে; যার বেশির ভাগই ভেজাল। এ জ্বালানি ব্যবহারে যানবাহনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আর খোলা অবস্থায় বিক্রি হওয়ায় নাশকতার কাজেও তা ব্যবহারের শঙ্কা রয়েছে। আছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তেলের ডিপোকেন্দ্রিক যে ব্যবসায়ীরা আছেন তাঁদের মাধ্যমেই অবৈধভাবে খোলাবাজারে তেল চলে যাচ্ছে।

পেট্রোলিয়াম-সংক্রান্ত আইন অনুসারে, জ্বালানি তেল-পেট্রল-ডিজেলের ব্যবসার জন্য বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। শুধু ঢাকায় ৪০ এবং পুরো ঢাকা বিভাগে আছে ১৫০টির মতো পেট্রলপাম্প স্টেশন; যেগুলো বৈধ উপায়ে তেল বিক্রি করছে। অথচ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় সড়কের ওপরে বিভিন্ন দোকানে প্লাস্টিকের বোতলে পেট্রল-অকটেন বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্নমানের এসব ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি হচ্ছে, এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতি হয়। ভেজাল এ তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে।

সরেজমিনে ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মিরপুর-১, মিরপুর ১১, ধোলাইখাল, গাবতলী এবং ঢাকার পাশে গাজীপুর, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জে প্রধান সড়কের ওপর মোটর পার্টসের দোকানসহ ছোটখাটো মুদি দোকানে দেদার এসব দাহ্য পদার্থ বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতারা অবৈধভাবে তেল সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। আগে লুকিয়ে এসব বিক্রি করলেও এখন প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় কোনো রাখঢাক ছাড়াই খোলা জায়গায় পেট্রল-অকটেন বিক্রি হচ্ছে। মূলত মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, বাসচালকরা এসব জ্বালানি বেশি কেনেন।

এসব অবৈধ দোকানের মালিকরা স্বীকার করেন, সরকারি যানবাহনের একশ্রেণির অসাধু চালক তাঁদের কাছে অবৈধভাবে নিয়মিত তেল সরবরাহ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট কারের অসাধু চালকরাও চুরি করে এসব দোকানে তেল বিক্রি করেন। এ ক্ষেত্রে চালকরা পেট্রলপাম্পের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে তা বিক্রি করে দেন। তালিকায় আরও আছেন বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম-জাতীয় গাড়ির চালকরা। তাঁরাও গোপনে তেল বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন পেট্রলপাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাই পথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে ভেজাল এ তেল বিক্রি করা হয়। পেট্রলপাম্প মালিকরা জানান, এখন ছোট ডিসপেনসার দিয়ে ব্যারেলের মধ্য থেকে তেল বিক্রি হচ্ছে। এটি পুরোটাই অবৈধ। তাঁরা জেলা প্রশাসক-পুলিশকে বলে অনেকবার এ অবৈধ কাজ বন্ধের চেষ্টা করেন। বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল বলেন, ‘এ ধরনের দাহ্য পদার্থ খোলাবাজারে বিক্রি করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। লন্ড্রির দোকান, মুদি দোকান, গ্রামগঞ্জ-হাটবাজার যেখানে খুশি বিক্রি হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হলে পুলিশের র‌্যাপিড কম্বিং অপারেশন প্রয়োজন। এ ধরনের তেলে ভেজাল থাকার শঙ্কা শতভাগ। এরা কোনো ক্যাশমেমো দেয় না, এদের কোনো পরিচয়ও নেই। এ তেলের মান পরীক্ষা করার কোনো বিষয় নেই। এতে গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি হয় এবং পরিবেশদূষণও বাড়ে। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও আছে।’