ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলা ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়ে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালেও বহুল আলোচিত ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ এখনো স্থগিতই রয়ে গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, দুই দেশের চারজন সরকারি সূত্রের বরাতে এই তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তির আওতায় সিন্ধু নদ ও তার উপনদীগুলোর পানি বণ্টন করা হয়। পাকিস্তানের কৃষি খাতের ৮০ শতাংশ পানি সরবরাহ এই চুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
সম্প্রতি ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত একতরফাভাবে চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানায়।
যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা থাকলেও ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ আলোচনার অন্তর্ভুক্ত ছিল না বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পানি মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। একই মন্তব্য করেন ভারত সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই বিষয়ে ভারত বা পাকিস্তানের কোনো সরকারি দপ্তর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কাশ্মীর হামলার পর দুই দেশ বাণিজ্য, ভিসা কার্যক্রম এবং সীমান্ত চলাচল বন্ধসহ পাল্টাপাল্টি কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
ভারত সরকারের দুই কর্মকর্তা জানান, “সব ধরনের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা, যেমন—বাণিজ্য ও ভিসা স্থগিতকরণ—চলমান থাকবে, যদিও সাময়িকভাবে গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে।”
উল্লেখ্য, ৭ মে থেকে ভারত, পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ চালানোর পর সীমান্তে প্রতিদিন সংঘর্ষ চলছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় ১০ মে সন্ধ্যায়, যখন দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ স্থগিত থাকায় দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান উত্তেজনা পুনরায় বাড়তে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলতে পারে।