ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধের শুরু: হুতির হুঁশিয়ারি হাজারীবাগে ট্যানারির গুদামে আগুন দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মতিন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেফতার অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল উখিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মৎস্য উন্নয়নে ৫৬ জেলায় মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার

স্বার্থের সংঘাতে পুড়ছে তেলক্ষেত্র, কী আছে সিরিয়ার ভাগ্যে?

ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও সংঘাতে সিরিয়ার তেল খাত অনিশ্চয়তায়।

সিরিয়ার তেলক্ষেত্র: নতুন রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জের মুখে

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার তেলক্ষেত্র নিয়ে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির তেল ও গ্যাস সম্পদ এখন মার্কিন-সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ), যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কের মতো শক্তির মধ্যে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি জটিল রাজনৈতিক খেলায় পরিণত হয়েছে।

সিরিয়ার তেলের ইতিহাস ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ

সিরিয়ায় তেল শিল্পের যাত্রা শুরু ১৯৩৩ সালে, যখন ইরাকি পেট্রোলিয়াম কোম্পানি কিরকুকে প্রথম তেলক্ষেত্র আবিষ্কার করে। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে।

১৯৬৩ সালে বাথ পার্টির ক্ষমতা দখলের পর বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং ১৯৭৪ সালে সিরিয়ান পেট্রোলিয়াম কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮০ সালে আল-ফুরাত পেট্রোলিয়াম কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে তেলক্ষেত্রের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরও মজবুত হয়।

এসডিএফ ও মার্কিন সামরিক প্রভাব

বর্তমানে এসডিএফ দেশটির তেলক্ষেত্রের ৯০ শতাংশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। যদিও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত তেল আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করা সম্ভব নয়, তা কালোবাজারে ব্যারেলপ্রতি ১৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এই আয় সাধারণ নাগরিকদের জন্য তেমন কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে না।

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার তেলক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগ না করলেও সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে। যদিও মার্কিন প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৯ সালে সামরিক সহায়তা প্রত্যাহারের হুমকি দিলেও সীমিত সংখ্যক সেনা সেখানে রেখেছিল।

তুরস্কের ভূমিকা

তুরস্ক সিরিয়ার তেলক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাহরির আল-শাম গোষ্ঠীর প্রতি তাদের সমর্থন এবং তুরস্কের আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ানোর প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে সিরিয়ার তেল সম্পদ নিয়ে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সিরিয়ার তেলক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ মূলত এসডিএফ, যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কের ভূমিকায় নির্ভরশীল। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন এই সম্পদকে ঘিরে নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।

সিরিয়ার তেল সম্পদের বর্তমান অবস্থা দেশটির অর্থনীতি ও সাধারণ জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য এই সম্পদ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিযোগিতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আগের সতর্কবার্তা স্মরণ করালেন খামেনি

স্বার্থের সংঘাতে পুড়ছে তেলক্ষেত্র, কী আছে সিরিয়ার ভাগ্যে?

প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও সংঘাতে সিরিয়ার তেল খাত অনিশ্চয়তায়।

সিরিয়ার তেলক্ষেত্র: নতুন রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জের মুখে

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার তেলক্ষেত্র নিয়ে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির তেল ও গ্যাস সম্পদ এখন মার্কিন-সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ), যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কের মতো শক্তির মধ্যে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি জটিল রাজনৈতিক খেলায় পরিণত হয়েছে।

সিরিয়ার তেলের ইতিহাস ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ

সিরিয়ায় তেল শিল্পের যাত্রা শুরু ১৯৩৩ সালে, যখন ইরাকি পেট্রোলিয়াম কোম্পানি কিরকুকে প্রথম তেলক্ষেত্র আবিষ্কার করে। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে।

১৯৬৩ সালে বাথ পার্টির ক্ষমতা দখলের পর বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং ১৯৭৪ সালে সিরিয়ান পেট্রোলিয়াম কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮০ সালে আল-ফুরাত পেট্রোলিয়াম কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে তেলক্ষেত্রের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরও মজবুত হয়।

এসডিএফ ও মার্কিন সামরিক প্রভাব

বর্তমানে এসডিএফ দেশটির তেলক্ষেত্রের ৯০ শতাংশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। যদিও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত তেল আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করা সম্ভব নয়, তা কালোবাজারে ব্যারেলপ্রতি ১৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এই আয় সাধারণ নাগরিকদের জন্য তেমন কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে না।

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার তেলক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগ না করলেও সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে। যদিও মার্কিন প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৯ সালে সামরিক সহায়তা প্রত্যাহারের হুমকি দিলেও সীমিত সংখ্যক সেনা সেখানে রেখেছিল।

তুরস্কের ভূমিকা

তুরস্ক সিরিয়ার তেলক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাহরির আল-শাম গোষ্ঠীর প্রতি তাদের সমর্থন এবং তুরস্কের আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ানোর প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে সিরিয়ার তেল সম্পদ নিয়ে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সিরিয়ার তেলক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ মূলত এসডিএফ, যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কের ভূমিকায় নির্ভরশীল। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন এই সম্পদকে ঘিরে নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।

সিরিয়ার তেল সম্পদের বর্তমান অবস্থা দেশটির অর্থনীতি ও সাধারণ জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য এই সম্পদ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিযোগিতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।