ঢাকা , রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
জুলাই-আগস্ট স্মৃতি জাদুঘর করবে সরকার: ফারুকী এসএসসি পরবর্তী সময়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স শুরু বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নতুন প্রজন্ম গড়তে শিক্ষা পরিবেশ উন্নয়নের তাগিদ সোমবার থেকে দ্বিতীয় ধাপের রাজনৈতিক সংলাপ শুরু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল রোববার দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে উন্নতি হয়েছে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত মে মাসে নারী-শিশু নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র উদ্বেগজনক: এমএসএফ প্রতিবেদন জলাবদ্ধতা মোকাবিলায় সিলেটে সিসিকের কন্ট্রোল রুম চালু কুষ্টিয়ায় নারী ও শিশুসহ ৯ বাংলাদেশিকে পুশইন করলো বিএসএফ রাতে লিচু খাওয়া: উপকারিতা ও সতর্কতা

সীমান্তে উত্তেজনার খবর শুনে ঘোড়া নিয়ে ছুটে এলেন শফিকুল

কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে উত্তেজনার খবর শুনে দ্রুত নিজ ঘোড়া নিয়ে ছুটে আসেন শফিকুল ইসলাম। তিনি এসেই বিজিবি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে ঘোড়া নিয়ে ছুটে বেড়ান ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে। শফিকুল ইসলাম রৌমারী উপজেলার চুলিয়ারচর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা।

সীমান্তে আসার পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ফাঁকা গুলি ও কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা দেখে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় বিএসএফ যদি বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে, তাহলে আমি শফিকুল ইসলাম ঘোষণা দিতেছি যে গ্রামবাসীকে নিয়ে আমরাও যুদ্ধ করব।বিজিবি আমাদের সঙ্গে আছে।’

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৭ মে) ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় ১৪ ব্যক্তিকে বাংলাদেশে পুশ-ইনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে আতঙ্ক রয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।

স্থানীয়রা বলছে, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ী সীমান্তে যেভাবে যুদ্ধ হয়েছিল, সেভাবেই যুদ্ধের ছক আঁকছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীরা। তবে সীমান্তবাসীরা সীমান্ত সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান চান। তবে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে চলছে উত্তেজনা।

এর আগে ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ী গ্রামে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (তৎকালীন বিডিআর) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মধ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।

ওই সংঘর্ষে বিএসএফের ১৬ জন সৈন্য নিহত হন। যাদের মরদেহ বাংলাদেশ সীমান্তের ধানক্ষেতে পড়ে থাকে। এ সংঘর্ষে দুজন বিডিআর সদস্যও নিহত হন। তবে স্থানীয়দের দাবি, তৎকালীন সময়ে আরো বেশি বিএসএফ সদস্য নিহত হয়েছে।

ঐতিহাসিক ওই সীমান্ত এলাকায় বিজিবি-বিএসএফ নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাইফুল ইসলাম তিনি বড়াইবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা তিনি ২০০১ সালে ‘বড়াইবাড়ী’ যুদ্ধের অংশ নেওয়া এক যোদ্ধা। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোরে ভারতের আসাম রাজ্যের মাইনকারচর কাকড়িপাড়া সীমান্ত পথে বিএসএফ ১৪ জনকে (৯ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী) গেট খুলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। বিজিবি ও স্থানীয়রা খবর পেয়ে এতে বাধা দেয়। এ বিজিবি ওই নারী-পুরুষদের ভারতীয় সীমান্তে ফেরত দিতে চাইলে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে বিএসএফ রাবার বুলেট ছোড়ে, কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, ‘বিএসএফ সীমান্তে ভারী অস্ত্রসহ অতিরিক্ত সৈন্য জড়ো করেছে। আমরাও বিজিবিসহ সীমান্তে অবস্থান করছি। ওরা অন্যায়ভাবে ওদের নাগরিকদের আমাদের দেশে ঠেলে দিয়েছে। এ ঘটনার পর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে বিএসএফ ড্রোন উড়িয়েছে। এই নিয়ে সীমান্তে বর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।’

জনপ্রিয়

জুলাই-আগস্ট স্মৃতি জাদুঘর করবে সরকার: ফারুকী

সীমান্তে উত্তেজনার খবর শুনে ঘোড়া নিয়ে ছুটে এলেন শফিকুল

প্রকাশিত: ১১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে উত্তেজনার খবর শুনে দ্রুত নিজ ঘোড়া নিয়ে ছুটে আসেন শফিকুল ইসলাম। তিনি এসেই বিজিবি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে ঘোড়া নিয়ে ছুটে বেড়ান ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে। শফিকুল ইসলাম রৌমারী উপজেলার চুলিয়ারচর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা।

সীমান্তে আসার পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ফাঁকা গুলি ও কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা দেখে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় বিএসএফ যদি বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে, তাহলে আমি শফিকুল ইসলাম ঘোষণা দিতেছি যে গ্রামবাসীকে নিয়ে আমরাও যুদ্ধ করব।বিজিবি আমাদের সঙ্গে আছে।’

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৭ মে) ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় ১৪ ব্যক্তিকে বাংলাদেশে পুশ-ইনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে আতঙ্ক রয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।

স্থানীয়রা বলছে, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ী সীমান্তে যেভাবে যুদ্ধ হয়েছিল, সেভাবেই যুদ্ধের ছক আঁকছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীরা। তবে সীমান্তবাসীরা সীমান্ত সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান চান। তবে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে চলছে উত্তেজনা।

এর আগে ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ী গ্রামে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (তৎকালীন বিডিআর) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মধ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।

ওই সংঘর্ষে বিএসএফের ১৬ জন সৈন্য নিহত হন। যাদের মরদেহ বাংলাদেশ সীমান্তের ধানক্ষেতে পড়ে থাকে। এ সংঘর্ষে দুজন বিডিআর সদস্যও নিহত হন। তবে স্থানীয়দের দাবি, তৎকালীন সময়ে আরো বেশি বিএসএফ সদস্য নিহত হয়েছে।

ঐতিহাসিক ওই সীমান্ত এলাকায় বিজিবি-বিএসএফ নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাইফুল ইসলাম তিনি বড়াইবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা তিনি ২০০১ সালে ‘বড়াইবাড়ী’ যুদ্ধের অংশ নেওয়া এক যোদ্ধা। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোরে ভারতের আসাম রাজ্যের মাইনকারচর কাকড়িপাড়া সীমান্ত পথে বিএসএফ ১৪ জনকে (৯ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী) গেট খুলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। বিজিবি ও স্থানীয়রা খবর পেয়ে এতে বাধা দেয়। এ বিজিবি ওই নারী-পুরুষদের ভারতীয় সীমান্তে ফেরত দিতে চাইলে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে বিএসএফ রাবার বুলেট ছোড়ে, কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, ‘বিএসএফ সীমান্তে ভারী অস্ত্রসহ অতিরিক্ত সৈন্য জড়ো করেছে। আমরাও বিজিবিসহ সীমান্তে অবস্থান করছি। ওরা অন্যায়ভাবে ওদের নাগরিকদের আমাদের দেশে ঠেলে দিয়েছে। এ ঘটনার পর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে বিএসএফ ড্রোন উড়িয়েছে। এই নিয়ে সীমান্তে বর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।’