
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো থেকে ফের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে সংস্থাটিকে ‘ইসরাইলবিরোধী পক্ষপাতদুষ্ট’ ও ‘বিভাজনমূলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানায়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “বর্তমানে ইউনেস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ আর আমাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।” তিনি অভিযোগ করেন, সংস্থাটি একটি ‘বিশ্বায়নবাদী ও মতাদর্শিক এজেন্ডা’ নিয়ে এগোচ্ছে এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে ইউনেস্কোর ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সদস্যপদ প্রদানের সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতির পরিপন্থী হিসেবে দেখছে। ব্রুস বলেন, “এ সিদ্ধান্ত ইউনেস্কোর মধ্যে ইসরাইলবিরোধী বার্তা ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ তৈরি করেছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ অনেকাংশে প্রত্যাশিত ছিল। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখনই ইউনেস্কো থেকে দেশকে প্রত্যাহার করেছিলেন। পরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটির সদস্যপদ পুনরুদ্ধার করেছিল।
তবে এটি নতুন ঘটনা নয়। ১৯৮৩ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান প্রথমবার ইউনেস্কো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন, সংগঠনকে ‘সোভিয়েতপন্থী ও দুর্নীতিগ্রস্ত’ আখ্যা দিয়ে। পরবর্তীতে জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে যুক্তরাষ্ট্র আবারো সদস্যপদ ফিরে পায়।
বিশ্ব ঐতিহ্য সংরক্ষণে ইউনেস্কোর অবদান সমাদৃত হলেও, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে এই কাজের আড়ালে সংস্থাটি রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও বিতর্কিত অবস্থান গ্রহণ করেছে, যা তাদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়।
এই ঘোষণার ফলে বিশ্বসংস্থা ইউনেস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক একবার আরও নাজুক পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।