
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে একটি প্রশিক্ষণকৃত বিমান বিধ্বস্ত। আহত বহু শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
এখন পর্যন্ত দগ্ধ রুগীর সংখ্যা ৫০+ ছাড়িয়েছে।বাড়তে পারে আরোও।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী,উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে পাইলট তৌকির আহমেদ নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার সময় ক্লাস চলছিল প্রাথমিক শ্রেণির শিশুদের।
হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে স্কুল ভবন। আর ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক শিশুরা ভয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে, অনেকেই ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে দৌড়ে মাঠে চলে আসে। মাইলস্টোন কলেজের মূল ক্যাম্পাসের উত্তর পাশে খেলার মাঠ ঘেঁষা অংশেই বিমানটি পড়ে। পাশেই অবস্থিত প্রাইমারি শাখার ভবন। দুর্ঘটনার পরপরই ছুটে আসেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। অনেক মা-বাবাকে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সন্তানদের নাম ধরে ডেকে কাঁদতে দেখা যায়।
নাবিলা নামের কলেজ শাখার এক শিক্ষার্থী বলেন, বিকট শব্দ হতেই ক্লাসের শিশুরা ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করে। আমরা বুঝে উঠতে পারছিলাম না— কী হয়েছে? জানালার পাশে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। কিছু শিক্ষার্থী দৌড়ে নিচে নেমে যায়। বাচ্চারা ভেতরেই ছিল৷ কেউ বের হতে পারেনি।
নিহতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়াতে পারে। সবচেয়ে বেশি শিশু ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির যে ভবনটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, সেই ভবনে তখন স্কুলের জুনিয়র শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছিল বলে জানা গেছে।
জুনিয়র সেকশনের ওই ভবনে নার্সারি, ওয়ান, টু, থ্রি— এসব শ্রেণির ক্লাস হয়।
যুদ্ধবিমানটি সরাসরি ভবনে আঘাত করে। ভবনটিতে ১০০-১৫০ শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা যাচ্ছে।
মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্ত থেকে বেঁচে ফেরা শিক্ষক বলেন, 'ঘটনাটি এতটাই আকস্মিক ছিল যে কারোরই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর সুযোগ ছিল না।'
তিনি বলেন, ‘বিমানটি যে ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে, সেই ভবনে থাকা শিক্ষার্থীরা ছুটির ঘণ্টা পড়ার পর ক্লাস থেকে বের হওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল। এটা ঠিক স্কুল ছুটির সময় ছিল। শিক্ষার্থীরা গেটে অপেক্ষা করছিল। কী ঘটছে তা বোঝার আগেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ল। মুহূর্তেই দৃষ্টিসীমা কমে আসলো। আমি শুধু আগুন দেখতে পাচ্ছিলাম তারপর ধোঁয়া।'
নিজের আঘাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, 'আমার হাত পুড়ে গিয়েছে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। আমার মুখ ও কান ঝলসে গেছে।'
এ অবস্থায় ওই শিক্ষক দ্রুত ওয়াশরুমে গিয়ে একটি ভেজা কাপড় নিয়ে এসে নিজের নাক ঢাকেন। তিনি বলেন, 'কাছে থাকা বাচ্চাদেরও আমি একই কাজ করতে বললাম। তাদের অনেকের শার্টে ততক্ষণে আগুন ধরে গিয়েছিল। আমি তাদের নিচু হয়ে থাকতে এবং মুখ ঢাকতে বললাম।'
ওই শিক্ষকের সাথে তিনজন শিক্ষার্থী সেখান থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়। তাদের ভেতর গুরুতর দগ্ধ একজনকে সিএমএইচ-এর বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়।