
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে বিতর্কিতভাবে নিয়োগ পাওয়া ৬৫ জন মেডিকেল অফিসারের চাকরি বাতিল করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, “নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ও সমালোচনা উঠেছে। তাই পরিচালনা বোর্ডের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সর্বসম্মতভাবে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন নিয়ম মেনে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুনভাবে ৪২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।”
এর আগে গত ৪ জুলাই কোনো লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই অভ্যন্তরীণভাবে ৬৫ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। অধিকাংশ নিয়োগপ্রাপ্ত একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী হওয়ায় চিকিৎসক সমাজে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়।
তদন্তে উঠে আসে, পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল অস্বচ্ছ ও পক্ষপাতদুষ্ট। পরিচালক ডা. মাহবুবুল হক ও নিয়োগ কমিটির প্রধান ডা. একেএম আজিজুল হক অভ্যন্তরীণ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেন। জাতীয় দৈনিক কিংবা ওয়েবসাইটে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।
বঞ্চিত চিকিৎসকরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে কর্মরত অনারারি চিকিৎসকদের একটি অংশকে হঠাৎ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের অধিকাংশই কোনো প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার অংশ হননি। লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগের ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত হন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়।
তদন্তে একাধিক অনিয়ম প্রমাণিত হয়। জানা গেছে, ২০২১ সালেও একই পদ্ধতিতে ৬০ জনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে পরে স্থায়ীকরণ করা হয়। এবারও একই কৌশল অনুসরণ করায় বঞ্চিত চিকিৎসকরা একে ‘জুলাই বিপ্লবের আদর্শের সঙ্গে প্রতারণা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তাদের দাবি, শিশু হাসপাতাল স্বায়ত্তশাসিত হলেও এর বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ আসে সরকার থেকে, তাই নিয়োগে স্বচ্ছতা ও নিয়ম মেনে চলা উচিত ছিল—কিন্তু সেটি প্রতিটি ধাপে উপেক্ষিত হয়েছে।