
স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সব ধরনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে পর্যবেক্ষক হতে গেলে ন্যূনতম এইচএসসি পাস বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর।
এমন যোগ্যতা নির্ধারণ করে ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক এ নীতিমালা জারির কথা জানান। নতুন নীতিমালা জারির মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালে প্রণীত নীতিমালা বাতিল হয়ে গেছে। পাশাপাশি আগের নিবন্ধিত ৯৬টি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
এই নীতিমালা জারির আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে গেলে এসএসসি পাস বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হতো। বয়সের সীমারেখা ছিল ২৫ বছরের উর্ধ্বে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল বা অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে এমন কেউ পর্যবেক্ষক সংস্থায় থাকতে পারবে না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা আছে এমন ব্যক্তিরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার নন এমন লোককে পর্যবেক্ষক হিসেবে মোতায়েন করতে হবে।
নির্বাচন চলাকালে ভোটের দিনসহ আগে-পরে মোট তিনদিন পর্যবেক্ষক সংস্থা মোতায়েন থাকবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ হবে ৫ বছর। তবে কমিশন চাইলে নির্ধারিত সময়ের আগেও নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে।
বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা বা কূটনৈতিক মিশনকে নির্বাচন কমিশনের আওতায় নিবন্ধিত করার বিধান রাখা হয়নি। তাদের জন্য আলাদা নীতিমালা রয়েছে। যেমন—আন্তর্জাতিক সংস্থা বা কূটনৈতিক মিশনের স্থানীয় কর্মকর্তারা স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন। বিদেশিদের ক্ষেত্রে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালায় ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের স্থানীয় নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।
নিবন্ধন যেভাবে:
পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনের জন্য ১৫ দিন সময় দিয়ে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে ইসি। নির্ধারিত ফরমে আবেদন ইসি সচিবালয়ে জমা দিতে হবে। এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথিপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
এরপর নির্বাচন কমিশন প্রাপ্ত আবেদনপত্রের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের উপযুক্ত সংস্থার তালিকা প্রস্তুত করবে। পরে নিবন্ধিত সংস্থাগুলোকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দিয়ে থাকলে নিবন্ধন বাদ:
এর আগে যেসব পর্যবেক্ষক সংস্থা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাদের নিবন্ধন দেওয়া যাবে না বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করেছে ইসি।
বেসরকারি সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে নীতিমালায় আরও কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে এবং গঠনতন্ত্রে এসব বিষয়সহ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষক হওয়ার আবেদন করতে পারবে।