"মনগড়া ছবি, বিকৃত বার্তা: গোপালগঞ্জ সহিংসতা ঘিরে বিভ্রান্তির ছায়া"

আপলোড সময় : ১৭-০৭-২০২৫ ১০:৪২:১৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৭-০৭-২০২৫ ১০:৪৭:০৫ পূর্বাহ্ন
গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক বিভ্রান্তিকর ও পুরনো ছবি ছড়িয়ে জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ তোলা হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৬ জুলাই সংঘর্ষের দিন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন, পুরনো ও ভুল ব্যাখ্যাসম্পন্ন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। এতে সংঘর্ষের প্রকৃত পরিস্থিতিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রেস উইংয়ের দাবি, এটি একটি সংগঠিত অনলাইন প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ, যার মাধ্যমে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগপন্থী ব্যক্তিরা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপনচরিত্রের প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা এমন সব ছবি শেয়ার করেছেন, যেগুলো অন্য সময় ও প্রেক্ষাপটে তোলা হলেও সেগুলোর মাধ্যমে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে ভয়াবহ ও একতরফা আক্রমণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস এম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু ছবি শেয়ার করেন, যাতে আহত কিশোর, আগুনে পুড়তে থাকা এলাকা ও উত্তেজিত জনতার চিত্র দেখা যায়। পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, ছবিগুলো গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের সময়কার। অথচ অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের ভিন্ন একটি ঘটনার।
অন্য একটি পোস্টে ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তার গুলি ছোঁড়ার দৃশ্য শেয়ার করে সেটিকে গোপালগঞ্জ সংঘর্ষের সময়কার বলা হয়। তবে তা ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে তোলা ছবি বলে প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে।
আরও একটি ছবি, যেখানে হাসপাতালে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিতে দেখা যায়, সেটিও গোপালগঞ্জের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়। কিন্তু সেই ছবিও ২০২৩ সালের ২০ মার্চের একটি ভিন্ন ঘটনার বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
একইভাবে, একটি শিশুর ছবি ছড়িয়ে বলা হয়, সে ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে অংশ নেয়। ছবির ডিজিটালি সম্পাদিত একটি সংস্করণও অনলাইনে শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার নামের একজন ব্যক্তি, যাকে প্রেস উইং “আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট” হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, ছবিটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে গাজীপুরের সফিপুরে ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব ভুয়া ছবি ও বিভ্রান্তিকর পোস্টের পাশাপাশি আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করেছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। প্রেস উইং এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার অংশ।

প্রেস উইংয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, সংঘর্ষ শুরু হয় গোপালগঞ্জ শহরে একটি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ শেষে যখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগপন্থীদের হামলার মুখে পড়ে। এরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সহিংসতায় অন্তত চারজন নিহত হন এবং পুলিশের একটি গাড়ি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি হামলা ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্থানীয় প্রশাসন ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করে। প্রেস উইংয়ের মতে, সংঘর্ষের প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত এবং মনগড়া ছবি ও তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যা মাঠের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]