
১৩ জুলাই, রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাঙালী মুসলিম যুব সংঘের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান—কারাবন্দি মেধাবী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী ফারাবি শফি, সাইমন, আসাদুল্লাহ ও অন্যান্য নির্যাতিতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
বিগত আওয়ামী জাহিলি শাসন আমলে বাংলাদেশে তথাকথিত "জঙ্গি দমন" অভিযানের নামে বারবার এক নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, যা একদিকে যেমন দেশের সাধারণ জনগণের মাঝে অযথা আতঙ্ক ছড়িয়েছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করেছে।
বিশেষতঃ জাতীয় নির্বাচন, রাজনৈতিক সংকট বা সরকারবিরোধী গণআন্দোলনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ করে জঙ্গি ‘আস্তানা’, ‘অভিযান’, বা ‘গ্রেফতার’ নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমরা মনে করি।
এই ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যগুলো ছিলো—
ক. আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বাংলাদেশকে ‘সন্ত্রাস-সংকুল রাষ্ট্র’ হিসেবে চিত্রিত করা।
খ. রাজনৈতিক বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করতে ‘জঙ্গি’ তকমা লাগিয়ে দমন নীতি চালানো।
গ. রাষ্ট্রীয় নির্যাতন ও গুম-খুনের কার্যক্রমকে বৈধতা দিতে ‘জঙ্গি অভিযানের’ মুখোশ ব্যবহার।
ঘ. বিদেশি সহায়তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সহানুভূতি অর্জন করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা।
আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, হলি আর্টিজান ট্র্যাজেডির পরপরই সরকার এই ইস্যুকে এমনভাবে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে যাতে বিরোধী দলসমূহ ও ধার্মিক জনগোষ্ঠীকে সন্দেহের চাদরে আবদ্ধ রাখা যায়। অথচ এখন পর্যন্ত বহু ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত বা বিচার হয়নি, বরং অনেকে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।
গত এক যুগে বাংলাদেশে এরকম “জঙ্গি” তকমা লাগানো অসংখ্য মামলার ভিত্তিতে শত শত যুবককে গ্রেফতার, কারাবন্দি এমনকি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ এসব মামলার অনেকগুলোতে নেই পর্যাপ্ত প্রমাণ, নেই স্বচ্ছ তদন্ত, নেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে বিচার। এসব ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, ভিন্নমত দমন ও ইসলামপন্থী আদর্শিক তরুণদের নির্যাতনের প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
বহু মামলায় দেখা যায়:
-জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে, পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন।
- সাক্ষী ছিলেন পরিচয়হীন, গোপন, বা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত।
- অভিযান ও গ্রেফতার হয়েছে নাটকীয়ভাবে, যা সংবাদমাধ্যমে আগেভাগেই "জঙ্গি" ঘোষণা দিয়ে; -বিচারপ্রক্রিয়া হয়েছে একপাক্ষিক, অনেক সময় আসামীদের আইনজীবী ঠিকভাবে কাজ করার সুযোগ পাননি।
তাই বাঙ্গালী মুসলমানদের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি—
১) সব “জঙ্গি” মামলার নিরপেক্ষ পুনঃতদন্ত করা হোক, যেখানে প্রমাণ ও সাক্ষ্য যথাযথভাবে যাচাই হবে।
২) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়েরকৃত মামলাগুলো বাতিল করে, দোষীদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হোক।
৩) ফাঁসির আদেশপ্রাপ্তদের মামলা হাইকোর্ট পর্যায়ে দ্রুত পুনর্বিচার করা হোক।
আমরা প্রত্যাশা করি, সরকার আমাদের দাবিগুলো আমলে নিয়ে আওয়ামীলীগ শাসন আমলে যে অন্যায় ও জুলুম হয়েছে তা সমাপ্ত করবেন এবং অন্যায়ভাবে কিংবা মিথ্যা নাটকের স্বীকার হয়ে, কেউ যেন আর বন্দি বা হয়রানির স্বীকার না হয় তা নিশ্চিত করবেন।
বাঙ্গালী মুসলমানদের পক্ষ থেকে—
বাঙ্গালী মুসলিম যুবসংঘ
যোগাযোগ: [email protected]
ওয়েবসাইট : BMYAbd.blogar.com
ফেসবুক: www.facebook.com/BMYAbd