জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে এটুআই-এর সহযোগিতায় আইসিটি সেল চালু করা হবে। ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত ‘ট্রেইনার্স ট্রেনিং’ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের কোডিং, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড কম্পিউটিং, ডেটা ব্যবস্থাপনা, অনলাইন নিরাপত্তা ও ডিজিটাল টুল ব্যবহারে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
তিনি বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে হবে, কারণ শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন সম্ভব নয়। এজন্য এটুআই-তে আইসিটি সেল খোলা হবে, যা কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে।”
আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “অনেক সময় প্রযুক্তি বিষয়ক পরিকল্পনা ক্লাসরুম পর্যন্ত পৌঁছায় না। এই প্রশিক্ষণ সেই দূরত্ব কমাবে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে সরাসরি প্রযুক্তি পৌঁছাবে।” পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. কাইয়ুম আরা বেগম বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এই উদ্যোগ সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী বাধ্যতামূলক আইসিটি কোর্সে অংশ নিচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (পাস) কোর্সেও পাঠ্যক্রম চালু হলে আরও দুই লাখ শিক্ষার্থী যুক্ত হবে। পরবর্তী ধাপে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষে এডভান্স আইসিটি কোর্স কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হবে।
আইসিটি কোর্সের কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য ৩ সেপ্টেম্বর এটুআই-এর সহযোগিতায় গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহায়তায় একটি মিশ্র (ব্লেন্ডেড) প্রশিক্ষণ পদ্ধতি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে অনলাইন ও সরাসরি শ্রেণিকক্ষ উভয় পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মূল প্রশিক্ষকরা পরবর্তী ধাপে মাস্টার ট্রেইনার ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ছিল মূল প্রশিক্ষকদের আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত করা, অনলাইন টুল ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কাঠামো সম্পর্কে অভিন্ন ধারণা তৈরি করা। অনুষ্ঠানের শেষে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষকদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়।
স্মরণযোগ্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২ হাজার ২৫৭টি কলেজে প্রায় ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এটি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।