কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই অপরিশোধিত তেল রপ্তানিতে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে ইরান। আন্তর্জাতিক তেল পরিবহন পর্যবেক্ষক সংস্থা ট্যাঙ্কারট্র্যাকার্স–এর তথ্য অনুযায়ী, গত চার সপ্তাহে দেশটি প্রতিদিন গড়ে ২৩ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করেছে—যা ২০১৮ সালের মে মাসের পর সর্বোচ্চ পরিমাণ।
সংস্থাটি সোমবার (১০ নভেম্বর) তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের দৈনিক তেল রপ্তানি এখন ২.৩ মিলিয়ন ব্যারেল, যা ২০১৮ সালের প্রথমার্ধের পর থেকে দেখা যায়নি।
তেল বিশ্লেষক হোমায়উন ফালাকশাহি গত অক্টোবরের শেষে জানিয়েছিলেন, ইরানের তেল বিক্রি দৈনিক ২১ লাখ ব্যারেল স্পর্শ করেছে, যা দেশটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানের ট্যাঙ্কারগুলো আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে অবাধে চলাচল করছে এবং নিয়মিতভাবে তেল রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় আরোপিত ওই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল ইরানের তেল রপ্তানি শূন্যে নামিয়ে আনা। কিন্তু বাস্তবে, তেহরানের রপ্তানি এখন ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের উচ্চ চাহিদা এবং বিকল্প বাণিজ্য চ্যানেল গড়ে তোলা ইরানকে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সক্ষম করেছে। ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা তেহরানের অর্থনীতিতে নতুন গতি যোগ করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে সরে গিয়ে ইরানের ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তবু সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান দেখায়, দেশটি এখন তেল রপ্তানিতে ধারাবাহিক পুনরুত্থান ঘটাচ্ছে।
সূত্র: মেহের নিউজ