ভারতের একমাত্র বিদেশি পূর্ণাঙ্গ সামরিক ঘাঁটি তাজিকিস্তানের আয়নি বিমানঘাঁটি ২০২২ সালে নীরবে তাজিক সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রায় দুই দশক ধরে মধ্য এশিয়ায় ভারতের কৌশলগত উপস্থিতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত এই ঘাঁটি আফগানিস্তান–পাকিস্তান সীমান্ত ও চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের ওপর নজরদারি সুবিধা দিত, যা হারানোর ফলে ভারতের প্রভাব সীমিত হতে পারে।
দুশানবের প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আয়নি বিমানঘাঁটি মূলত সোভিয়েত আমলে নির্মিত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। ২০০২ সালে তাজিক সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে ভারত প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে ঘাঁটিটি সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে। ভারতীয় সীমান্ত সড়ক সংস্থা রানওয়েটি ৩২০০ মিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করে, যা যুদ্ধবিমান ও ভারী পরিবহন প্লেনের চলাচলের উপযোগী ছিল।
ঘাঁটির অবস্থান আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডরের মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে এবং এটি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এই কারণে আয়নি ছিল ভারতের কৌশলগত নজরদারি ও মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের অন্যতম কেন্দ্র।
২০২২ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভারত নীরবে সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম প্রত্যাহার শুরু করে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, রাশিয়া ও চীনের চাপের কারণে তাজিকিস্তান নতুন লিজ নবায়নের অনুমতি দেয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তি শেষ হওয়ায় ঘাঁটিটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আয়নি ঘাঁটির ক্ষতি ভারতের জন্য বড় কৌশলগত ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি আফগানিস্তান, চীন ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি ও সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখন ভারতের ওই অঞ্চলে প্রভাব অনেকটা সীমিত হয়েছে।