দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইন একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। সাম্প্রতিক টাইফুন ‘কালমায়েগির’ ধ্বংসযজ্ঞ কাটিয়ে ওঠার আগেই দেশটির দিকে ধেয়ে আসছে আরেক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফাং-ওয়ং’। ফিলিপাইনের আবহাওয়া দফতর (পিএজিএএসএ) জানিয়েছে, রোববার রাতে দেশের পূর্ব উপকূলে স্থলভাগে আঘাত হানার আগে এটি “সুপার টাইফুনে” রূপ নিতে পারে।
শনিবার এক ব্রিফিংয়ে পিএজিএএসএর আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা জানান, টাইফুন ‘ফাং-ওয়ং’ প্রায় এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হবে। ইতোমধ্যে পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি প্রদেশে ভারি বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ‘উওয়ান’ নামে পরিচিত এই ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে কেন্দ্রে ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার বেগে বইছে, যা স্থলভাগে পৌঁছানোর সময় ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার গতিবেগে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে ব্যাপক ঘরবাড়ি ধ্বংস, গাছ উপড়ে পড়া এবং ৫ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া দফতর সতর্ক করে বলেছে, বিশেষ করে বিকোল অঞ্চল ও সামারের কিছু অংশে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। নিম্নাঞ্চলীয় ও উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি সামুদ্রিক সব কার্যক্রম স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে সোমবার পর্যন্ত কয়েকটি অঞ্চলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন এবং ফিলিপাইনের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে।
গত সপ্তাহে আঘাত হানা টাইফুন ‘কালমায়েগির’-এর তাণ্ডবে ফিলিপাইনে অন্তত ২০৪ জন এবং ভিয়েতনামে পাঁচজন নিহত হয়। কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন, এবং বহু এলাকা এখনও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। ফিলিপাইন সরকার জানিয়েছে, তখন প্রায় আট লাখ মানুষকে আগেভাগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ায় বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
প্রতিবছর গড়ে ২০টিরও বেশি ঝড় ও টাইফুনের মুখোমুখি হয় ফিলিপাইন। চলতি বছরই সুপার টাইফুন ‘রাগাসা’ ও ‘বুয়ালই’-এর মতো ঝড় দেশটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স