ইরাক যুদ্ধের নেপথ্যকার ডিক চেনি মারা গেছেন, বয়স ছিল ৮৪

আপলোড সময় : ০৫-১১-২০২৫ ১২:২২:২৫ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৫-১১-২০২৫ ১২:২২:২৫ পূর্বাহ্ন
ইরাক যুদ্ধের অন্যতম স্থপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৪ বছর। পরিবারের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, তিনি নিউমোনিয়া এবং হৃদ্‌যন্ত্র ও রক্তনালিজনিত জটিলতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
 
পরিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ডিক চেনি কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের জনসেবা করেছেন—হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ, ওয়াইওমিংয়ের কংগ্রেসম্যান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং পরে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। তাঁরা বলেন, “আমাদের দেশের জন্য তাঁর অবদানের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।”
 
২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চেনি। আধুনিক মার্কিন রাজনীতিতে তাঁকে সবচেয়ে প্রভাবশালী ভাইস প্রেসিডেন্টদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু ১৯৬৯ সালে, যখন তিনি রিচার্ড নিকসনের প্রশাসনে ডোনাল্ড রামসফেল্ডের সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
 
২০০৩ সালের ইরাক আক্রমণের অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিলেন চেনি। তিনি দাবি করেছিলেন—সাদ্দাম হোসেনের ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সরাসরি হুমকি। তবে দীর্ঘ যুদ্ধ ও ধ্বংসের পরও এমন কোনো অস্ত্রের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়নি।
 
এর আগে চেনি ১৯৮৯–১৯৯৩ সালে জর্জ বুশ সিনিয়রের অধীনে প্রতিরক্ষা সচিব ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের চিফ অব স্টাফ এবং পরবর্তী এক দশক মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
৯/১১ হামলার পর বুশ প্রশাসনের ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণার অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। চেনি মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে শাসন পরিবর্তনের আহ্বান জানান এবং আগাম হামলার নীতি—যা “ওয়ান পারসেন্ট ডকট্রিন” নামে পরিচিত—প্রস্তাব করেন। তাঁর মতে, সম্ভাব্য হুমকি মাত্র এক শতাংশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণ করে তা নির্মূল করতে হবে।
 
ইরাক যুদ্ধের পক্ষে ভারী চাপ প্রয়োগ করেছিলেন চেনি ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফেল্ড। চেনি দাবি করেছিলেন, ইরাকের সঙ্গে আল-কায়েদার যোগাযোগ আছে এবং ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার সঙ্গে ইরাক জড়িত হতে পারে—যা পরে তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
 
চেনির ধারণা ছিল, মার্কিন সেনারা ইরাকে “মুক্তিদাতা” হিসেবে স্বাগত পাবে এবং যুদ্ধ কয়েক সপ্তাহেই শেষ হবে। বাস্তবে যুদ্ধ চলে প্রায় এক দশক এবং প্রাণহানি ছিল ব্যাপক। গণবিধ্বংসী অস্ত্র না পেলেও চেনি পরে বলেন, সে সময়ের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইরাকে আক্রমণ “সঠিক সিদ্ধান্ত” ছিল।
 
সূত্র: বিবিসি, সিএনএন

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]